× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হাট নিয়ে খুলনার খামারিরা হতাশ

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১১ জুলাই ২০২০, শনিবার
ফাইল ছবি

করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুরহাটে বেচাকেনা নিয়ে হতাশ খুলনার খামারিরা। তারা এ অবস্থায় পশুর প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন। নানা দুশ্চিন্তা নিয়ে খামারি ও পশু ব্যবসায়ীরা। খামারিরা বলছেন, পরিস্থিতি বুঝেই তারা সিদ্ধান্ত নিতে চান। দাম পেলেই কেবল গরু হাটে তুলবেন। লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করবেন না। যে কারণে উপযুক্ত দামে আগে থেকেই বিক্রির চেষ্টা করছেন। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার (৮ই জুলাই) দুপুর ছঁৎনধহর ঐধঃ কযঁষহধ নামে একটি অনলাইন অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়।
খোলা হয় য়ঁৎনধহরযধঃশযঁষহধ.পড়স নামের ওয়েবসাইট। অ্যাপটিতে ইতিমধ্যে ৩০ হাজারের বেশি কোরবানির পশু নিবন্ধন করেছেন খামারিরা। খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় ৬ হাজার ৮৯০টি গবাদি পশুর খামার রয়েছে। এসব খামারে মোট গবাদি পশু রয়েছে ৪৫ হাজার ১৪৮টি। এর মধ্যে গরু ৪০ হাজার ৯৬৮টি এবং ছাগল ও ভেড়া ৪ হাজার ১৮০টি। গত বছর খুলনায় খামারের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ১টি এবং কোরবানির জন্য প্রস্তুত ছিল ৫১ হাজার ২৯৪টি পশু। গত বছরের তুলনায় এবার খামার ও গবাদিপশু উভয়ের সংখ্যাই কমেছে। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা সদরের মরহুম খান মোজাফ্‌ফর হোসেন ডেইরি ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী এরশাদ খান সবুজ জানান, তার খামারে ৮০টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে খুব একটা লাভ না হলেও ছেড়ে দেবেন। কিন্তু লোকসানে গরু বিক্রি করতে রাজি নন তিনি। দিঘলিয়া উপজেলার মেসার্স জামাল ডেইরি ফার্মের মালিক মো. জামাল হোসেন বলেন, পশুখাদ্যের অতিরিক্ত মূল্য এবং অন্যান্য খরচ মিলে গরুর লালন-পালনে ব্যয় বেড়েছে। তবে, ভারত বা মিয়ানমার থেকে পশু না আসলে এবং হাটে ক্রেতা সমাগম হলে লোকসান হবে না বলে আশাবাদ তার। দিঘলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুশেন হালদার জানান, এবার উপজেলায় ৫ হাজার পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে সাড়ে ৩ হাজার গরু এবং দেড় হাজার ছাগল। উপজেলায় কোরবানিতে পশু ঘাটতি হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়ার খামারি জাহিদ হোসেন বলেন, করোনার আশঙ্কায় এবার হাটের ওপর ভরসা করতে পারছি না। এ সংকটময় মুহূর্তে দাম নিয়েও সংশয়ে তিনি। দাকোপ উপজেলার কৈলাশঞ্জের খামারি অজয় মজুমদার জানান, তার খামারে কোরবানিযোগ্য ১০টি গরু রয়েছে। কিন্তু কেনার আগ্রহী কোনো ব্যাপারির দেখা পাচ্ছেন না। পশুহাটে ক্রেতার অভাবে দাম পড়ে যেতে পারে বলে চিন্তা তার। বটিয়াঘাটা উপজেলার সাচিবুনিয়ার খামারি মো. আলতাফ হোসেন বলেন, তার খামারে ১২টি দেশি গরু আছে। যার মধ্যে কোরবানিযোগ্য ৫টি। কিন্তু এ বছর ব্যাপারী অনেক কম
আসছেন। ফলে দুশ্চিন্তায় আছেন। বটিয়াঘাটা উপজেলার খামারি সুমন হোসেন বলেন, অনেকেই অনলাইনে গরু ক্রয়-বিক্রির চেষ্টা করছেন। কিন্তু খামারিরা হাটে নিয়ে গরু বিক্রি করতে না পারলে তুষ্ট হয় না। তেরখাদা এলাকার খামারি কাশেম আলী বলেন, প্রতি বছর কোরবানিতে ভালো দামে বিক্রির উদ্দেশ্যেই গরু লালন-পালন করেন। কিন্তু এবার দামের পাশাপাশি বিক্রি নিয়েও চিন্তিত তিনি। একই উপজেলার কাটেঙ্গার খামারি আয়ান শিকদার বলেন, করোনা সংকটে খাদ্য যোগান দিতে না পেরে খামারের অধিকাংশ গরু আগেই কম দামে বেচে দিয়েছেন। এখন খামারে কোরবানিতে বিক্রির জন্য চিতা বাঘ নামের বড় গরুটিই আছে। তবে খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এসএম আউয়াল হক বলেন, করোনার কারণে এবার পশুরহাটে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনা হবে। এছাড়া অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে। খামারিদের খুব বেশি হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে খুলনায় কোরবানির পশুরহাটে জীবাণুনাশক টানেল স্থাপন করা হবে। মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। কোনো বাস বা রেলস্টশনের পাশে হাট বসানো যাবে না। কোনো বয়স্ক লোক এবং শিশুদের হাটে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনের সভাকক্ষে কোরবানির পশুরহাট বিষয়ে এক প্রস্তুতি সভায় এ সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় আরো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, প্রত্যেককেই মাস্ক পরে গরুরহাটে প্রবেশ করতে হবে। হাটের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখা হবে। এছাড়া কেসিসি’র উদ্যোগে অনলাইনের মাধ্যমে পশু ক্রয়-বিক্রয়ও করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর