× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঢাবি ও বিএসএমএমইউ’র যৌথ উদ্ভাবন, নেগেটিভ প্রেশার আইসোলেশন ক্যানেপি

শেষের পাতা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
১২ জুলাই ২০২০, রবিবার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষকদের যৌথ গবেষণায় উদ্ভাবন করা হয়েছে নেগেটিভ প্রেশার আইসোলেশন ক্যানেপি। এতে আইসোলেশন কক্ষের দূষণ কমানো ছাড়াও স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাবে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। গতকাল বিএসএমএমইউ-তে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গবেষকরা। এতে ‘নেগেটিভ প্রেশার আইসোলেশন ক্যানোপি’ উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও আইসিইউ-তে ব্যবহার প্রসঙ্গে নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। গবেষকরা জানান, এতে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। তারা বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা দিতে গেলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরে নিরাপত্তা দেয়া জরুরি। আশা করি আমাদের এ ক্যানোপি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের নিরাপত্তায় মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সাইন্স প্রোগ্রামের আর্থিক সহায়তায় গবেষণা দলে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের একটি প্রজেক্টে নিয়োজিত গবেষকবৃন্দ, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রকৌশলী রাকিব সাখাওয়াত হোসেন এবং অংশীদারবিহীন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ‘বাইবিট লিমিটেড’-এর গবেষক প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান।
এদিকে বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি বিএসএমএমইউ-তে প্রদর্শিত হয়েছে। সেখানকার চিকিৎসকবৃন্দ এটিকে খুবই সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তৈরি করা নেগেটিভ প্রেশার ক্যানোপি বিএসএমএমইউ-এর ইনটেনসিভ কেয়ার বিভাগে ব্যবহার ও গবেষণার জন্য ইনস্টিটিউশনাল রিভিউ বোর্ড (ওজই) অনুমোদন করেছে। এতে আরো বলা হয়, কোভিড-১৯ এর মত সংক্রামক রোগীদের থেকে নির্গত জীবাণু হাসপাতালে অন্যান্য রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিরাট ঝুঁকি। রোগীর চারদিক ঘিরে রেখে বাতাস টেনে নিয়ে নেগেটিভ প্রেশার তৈরি করে এ ঝুঁকি কমানোর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে, যার কোনোটি কেবলমাত্র রোগীর মাথাকে ঢেকে রাখে, কোনোটি রোগীর শরীরের অর্ধেক ঢেকে রাখে, কোনোটি রোগীর বিছানার আশেপাশে বেশকিছু জায়গা ঘিরে তাবুর মত তৈরি করে, কোনোটি পুরো ঘর থেকেই বাতাস টেনে নেয়। তবে শেষের দু’টি ব্যবস্থায় রোগীকে সেবা দেয়া চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি থেকেই যায়। আবার রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে আনা-নেয়ার জন্য স্ট্রেচারের উপরও এ ধরনের ব্যবস্থা করা হয়। বিদেশ থেকে আসা এসব যন্ত্রপাতি ব্যয়বহুল এবং অনেক সময়েই মেরামতযোগ্য নয়। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপার্সন ও বর্তমানে অনারারী অধ্যাপক খোন্দকার সিদ্দিক-ই রব্বানীর নেতৃত্বে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত একটি গবেষণাদল সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইনে একটি ‘নেগেটিভ প্রেশার আইসোলেশন ক্যানোপি’ তৈরি করেছেন যা কেবলমাত্র একটি বিছানার উপরে একজন রোগীকে আলাদা করে রাখবে। তাছাড়া এটির চারদিকের পর্দা স্বচ্ছ ও উঁচু হওয়ায় রোগী কোনো রকম অস্বস্তিবোধ করবে না। বিদেশের যন্ত্রে ক্যানোপির ভিতরের বাতাসের জীবাণু ও ভাইরাসকে কেবলমাত্র বিশেষ ধরনের হেপা ফিল্টার দিয়ে যতটা সম্ভব আটকিয়ে রেখে পরিশোধিত বাতাস আবার হাসপাতালের কক্ষে ছেড়ে দেয়া হয়। এ গবেষক দলের ডিজাইনে হেপা ফিল্টারের সঙ্গে বাড়তি আছে আলট্রাভায়োলেট আলোর প্রযুক্তি যার মাধ্যমে প্রথমেই সব জীবাণু ও ভাইরাস ধ্বংস করে ফেলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এর গুণগত মান একই উদ্দেশ্যে তৈরি পৃথিবীর অন্যান্য যেকোনো যন্ত্র থেকে উন্নত। এর দামও হবে বিদেশের একই ধরনের যন্ত্রের থেকে অনেক কম। তাছাড়া দেশে তৈরি বিধায় সহজে মেরামতের গ্যারান্টিও থাকবে। গবেষকদলের প্রত্যাশা, দেশের এই ক্রান্তিকালে তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল, এ নেগেটিভ প্রেশার আইসোলেশন ক্যানোপি দেশের হাসপাতালগুলোতে ব্যবহৃত হয়ে অনেক মানুষের জীবন রক্ষায় এবং সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক হবে। তারা এ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর