× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১১ মে ২০২৪, শনিবার , ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

‘স্কিল ঘাটতিই হবে বড় ভোগান্তি’

খেলা

স্পোর্টস রিপোর্টার
১৩ জুলাই ২০২০, সোমবার

চার মাস! লম্বা এই সময়ের কথা বলতেই দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এলো মোহাম্মদ মিঠুনের কণ্ঠ থেকে। জাতীয় দলের এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নিজেকে দেয়ার মত কোনো সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না। ভাবতেও গা শিউরে উঠছে যে এত লম্বা সময় কীভাবে ব্যাট-বল হাতে মাঠের বাইরে! করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময়ে ঘরে বসে ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। হালকা জিম আর রানিং চলছে। অখণ্ড অবসর সময় পার করতে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের বিকল্পও তেমন নেই। তাই মাঠে ফেরার পর শারীরিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হবে না বলেই মনে করেন তিনি। তবে ভয়টা স্কিল নিয়ে। ব্যাট হাতে না নিতে নিতে যেন মরচে পড়ে যাচ্ছে।
মাঠে নামলে, হুক, পুল, কাভার ড্রাইভ, ডিফেন্স সবকিছু যেন নতুন করে শুরু করতে হবে। মিঠুন মনে করেন স্কিলের ঘাটতিই হবে ভোগান্তির বড় কারণ। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘আসলে এত লম্বা সময় আমি মাঠের বাইরে থাকিনি। আমরা যারা জাতীয় দলে খেলি বা দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছি তাদের জন্য এটি একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। এতদিন ব্যাট-বল ছাড়া আমরা থাকিনি। তাই আমি মনে করি, ফিটনেস যতটা না কঠিন হবে তার চেয়ে বেশি ভোগাবে স্কিলের ঘাটতি।’
মার্চে ক্রিকেট স্থগিত হওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল হয়তো এক বা দুই মাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তাই ব্যাটিং বা বোলিং কৌশল নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে না। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে বিষয়টি উল্টো হয়েছে। অবসর কাটাতে ক্রিকেটাররা বাড়িতে বা খোলা জায়গায় ট্রেনিং করেছেন পুরোদমে। দিনের লম্বা একটা সময় তারা কাজ করেছেন ফিটনেস ধরে রাখতে। প্রতিনিয়ত ফিজিও ও ট্রেনারের পরামর্শ তো নিয়েছেনই। কিন্তু ব্যাট-বল হাতে তাদের অনুশীলনের সুযোগ হয়নি বললেই চলে। যে কারণে দেখা গেছে জাতীয় দলের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম নিজেই মাঠের ব্যবস্থা করে স্কিল ট্রেনিং শুরু করেছেন। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ফেনীতে উইকেট বানিয়ে করছেন ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। তাসকিন আহমেদ বোলিং করছেন গাড়ির গ্যারেজে। এমন অনেকেই স্কিল ঠিক রাখতে বিসিবির পরোয়া না করেই মাঠে নেমে পড়েছেন। কিন্তু উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্রিকেটার এখনো স্কিল ট্রেনিং থেকে দূরে। তারা বিসিবির দিকে তাকিয়ে আছেন। এ নিয়ে মিঠুন বলেন, ‘দেখেন, আমরা যারা প্রফেশনাল ক্রিকেটার, তাদের ফিটনেস ফিরে পেতে খুব একটা সময় লাগবে না। যদি আমার কথা বলি, বাসায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করেই সময় কাটে আমার। তাই মাঠে আসার পর ফিটনেস পুরোপুরি ফিরে পেতে ২ সপ্তাহের  বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু স্কিল নিয়ে আমরা কিছুই করতে পারিনি এতদিন। তাই আমি মনে করি, স্কিলের যে ঘাটতি হলো সেটি আমাদের খেলায় বড় প্রভাব ফেলবে।’
২০২০ সালটাই যেন টাইগার ক্রিকেটারদের ফাঁকি দিয়ে চলে যাচ্ছে। একের পর এক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বাতিল হচ্ছে। সবশেষ এশিয়া কাপ বাতিল হওয়ায় টাইগার ক্রিকেটারদের জন্য এ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাতিল হয়ে গেলে সেই শঙ্কাই সত্যি হবে। এ বিষয়ে মিঠুন বলেন, ‘দেখেন, সবশেষ আশায় ছিলাম অন্তত এশিয়া কাপটা হবে। কিন্তু তা-ও হলো না। নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা সফরও বাদ। এখন যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও না হয়, তাহলে পুরো বছরটাই আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাবে। এতে করে শারীরিক, মানসিক, পারফরম্যান্স ও আর্থিক- চারটি বড় ক্ষতির মুখে পড়ছি। এই সময়টা সত্যি আমাদের জন্য ভীষণ ভীষণ হতাশার।’
ক্রিকেটহীন পরিস্থিতি ক্রিকেটারদের মনোজগতেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) অবশ্য ক্রিকেটারদের জন্য মনোবিদের শরণাপন্ন হচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যদি চান তাহলে তারা বিসিবির নিয়োগকৃত মনোবিদের সঙ্গে ক্লাস করে নিজেদের চাঙ্গা রাখতে পারেন। মিঠুনও মনে করেন এই মুুহূর্তে এটি ভীষণ প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘খেলা নেই। এসময়ে নানা চিন্তা আমাদের মনের জোরকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাই যদি মনোবিদের সঙ্গে দুই একটা সেশন করা যায় দারুণ হবে। কারণ মনোবিদরা যে ধরনের কথা বলেন এতে মানসিক শক্তি অনেক বেড়ে যায়। তাই যদি বিসিবি সুযোগ করে দেয় আমি অন্তত মনোবিদের সঙ্গে কথা বলতে চাই।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর