ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ছোট বক্সনগর এলাকার মো. মনির আহমেদ। পেশায় দন্ত চিকিৎসক। আসছে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় অস্ট্রাল জাতের এই গরুটির দাম হাঁকিয়েছেন ১৬ লাখ টাকা। তাই দামের সঙ্গে নামের মিলটা খুঁজতে তাকে প্রশ্ন করা হলো গরুটির নাম কি? প্রশ্ন করতেই মুচকি হাসি দিয়ে বীরদর্পে বললেন ‘নবাব’। কুচকুচে কালো রংয়ের ‘নবাবকে দেখতে ইতিমধ্যে দোহার-নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা আসছেন। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বক্সনগর এলাকার মনির ডেন্টালের স্বত্বাধিকারী মো. মনির আহমেদ শখের বশবর্তী হয়ে গত তিন বছর ২ মাস আগে এই অস্ট্রাল জাতের গরুটি কিনেছিলেন। তারপর এর নাম দেন ‘নবাব’। আজ সেই নবাবকে পরম যত্নে লালন করেছেন সন্তানের মতো।
তার দেখভালের জন্য রয়েছে তিনি ও তার ছোট ভাই পনির আহমেদ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্বতিতে, দেশীয় খাবার খাইয়ে প্রতিদিন পরম যত্নে লালন পালন করে গড়ে তুলেছেন নবাবকে।
কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে উচ্চবিত্তদের কাছে পছন্দের প্রথমে এই জাতের গরুর আকর্ষণ বরাবরই বেশি থাকে। নবাবের উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট। ওজন ১ টন। এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নবাবের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা। নবাবের জন্য করা হয়েছে আলাদা শেডের ব্যবস্থা। রাখা হয়েছে ২৪ ঘণ্টা ইলেকট্রিক ফ্যানের সুব্যবস্থা। শেডের সামনে ফাঁকা জায়গায় ‘নবাবকে’ ছেড়ে দেয়া হয় ব্যায়ামের জন্য। সরজমিনে গত মঙ্গলবার দুপুরে বক্সনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গরুটির মালিক মনির পরম যত্নে সন্তানের মতো তাকে গোসল করাচ্ছেন। যেন সন্তান আর পিতার অপূর্ব এক মেলবন্ধন।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সম্পা ও মো. আনিস জানান, নবাব নামের গরুটির মালিক মনির গরুটিকে সন্তানের স্নেহে দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করে আসছে। গরুটিকে দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখতে এলাকাবাসী হিসেবে আমাদেরও ভালো লাগছে। তাই বিত্তশালীদের প্রতি আমাদের আবেদন তারা যেন ন্যায্যমূল্য দিয়ে গরুটিকে কিনে নেয়।
নবাবের মালিক মনিরের মেয়ে নুসরাত আহমেদ আদ্রিতা জানায়, তাকে তার বাবা যেভাবে ভালোবাসে ঠিক তেমনিভাবে নবাবকেও ভালোবেসে পরম আদর যত্নে লালন-পালন করে আসছে।
এই গরু নিয়ে এখন স্বপ্নের বীজ বপন করছেন মো. মনির আহমেদ। তার এ স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। কোরবানিকে সামনে রেখে নবাবের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মনির।
এ বিষয়ে মনির আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, অনেক যত্ন করে আমি আমার ‘নবাবকে’ দুই বছর চার মাস ধরে লালন-পালন করে আসছি। ‘নবাবের’ প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রয়েছে সবুজ ঘাস, সয়াবিনের খৈল, গম, ভুট্টা, ছোলা, পায়রা। আমার ইচ্ছা নবাবকে বাড়ি থেকেই বিক্রি করবো। যেহেতু করোনার মহামারি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই কোরবানির হাটে গিয়ে বিক্রির তেমন কোনো ইচ্ছা নেই আমার। তিনি জানান ‘নবাবকে’ লালন-পালন করার ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। তাই কোরবানিকে সামনে রেখে নবাবগঞ্জের ছোট বক্সনগর এলাকার মনির আহমেদ এর অস্ট্রাল জাতের ‘নবাবের’ নজর দোহার-নবাবগঞ্জের সৌখিন ও বিত্তবান মানুষের মাঝে এক বাড়তি আমেজ সৃষ্টি করছে।