× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

স্বর্ণের পাতিল তোলার কথা বলে ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ, হাফেজ গ্রেপ্তার

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৬ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার

ছেলে ও তার স্ত্রীর সাথে সময়টা ভাল যাচ্ছিল না মা রোকেয়া করিমের। তাই পরিবারে শান্তির জন্য তাবিজ-কবজের চিকিৎসা করাতে যান কোরআনে হাফেজ লিয়াকত আলীর (৩৫) কাছে। চট্টগ্রামের মহানগরীর রহমান নগরের আলফালাহ গলির চৌধুরী ম্যানশন নামের একটি ভবনের বাসায় থাকেন লিয়াকত। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে এমন নানা চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন তিনি। কিন্তু চিকিৎসায় পারিবারিক অশান্তির মিটমাট করার নামে রোকেয়া করিমের কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন লিয়াকত। এরমধ্যে তার বাসার পাশে একটি মাঠে স্বর্ণের পাতিল আছে, যা তুলে দিলে অর্ধেক মূল্য দিয়ে দিতে হবে বলে টোপ দেয় সে। লোভে পড়ে রোকেয়া করিম মূল্য পরিশোধ বাবদ ৬৫ লাখ টাকা তুলে দেয় লিয়াকতের কাছে। দিন গড়িয়ে মাস গেলেও স্বর্ণের পাতিল না তোলায় টাকা ফেরত চাই রোকেয়া করিম।
কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া দূরের কথ, উল্টো আরো এক লাখ টাকা দাবি করে লিয়াকত। যা পাঁচলাইশ থানায় জানানো হয়। আর টাকা নিতে এসে বুধবার সকালে গ্রেপ্তার হন লিয়াকত।
বুধবার বিকেলে এ তথ্য জানান চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়া। তিনি বলেন, রোকেয়া করিম পাঁচলাইশের রহমান নগর আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন। সেখানে ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। এরমধ্যে লোকমুখে শুনতে পান লিয়াকত আলী নামের একজন হুজুর আছেন, যিনি কোরআনি চিকিৎসার মাধ্যমে দামপত্য কলহ সমাধান করতে পারেন। এরপর গত বছরের ১৬ অক্টোবর রহমান নগর আবাসিক এলাকায় লিয়াকত আলীর বাসায় গিয়ে ছেলে ও তার স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি জানান। সব কিছু শুনে লিয়াকত জানায়, বিরোধ সমাধান করা সম্ভব। তবে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লাগবে। লিয়াকতকে সেদিন ২০ হাজার টাকা দেন রোকেয়া করিম। তখন আমল করার জন্য কিছু সুরা শিখিয়ে দেয় লিয়াকত। চুক্তি অনুযায়ী কয়েকদিন পরপর রোকেয়াকে ডেকে নিয়ে টাকা আদায় ও সুরা শিখিয়ে দেয়ার কথা বলে বাকী টাকা হাতিয়ে নেয়।
আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে লিয়াকত রোকেয়াকে জানায়, তার বাসার পাশে দেবোত্তর মালিকানাধীন খালি মাঠে স্বর্ণের পাতিল রয়েছে। যার মূল্য ৩৫০ কোটি টাকা। এ তথ্য সে কিতাব দেখে জেনেছে। উক্ত স্বর্ণের পাতিল নিয়ে দিলে তাকে অর্ধেক দিয়ে দিতে হবে। এ জন্য তিনটি নন জুডিসিয়াল স্ট্যামেপ রোকেয়ার স্বাক্ষরও নেন লিয়াকত। লোভে পড়ে রোকেয়া ৬৫ লাখ টাকা দেয় লিয়াকতকে। কিন্তু স্বর্ণের পাতিল না পাওয়ায় কিছুদিন ধরে স্ট্যামপ ফেরত চান রোকেয়া। সর্বশেষ ১২ জুলাই রোকেয়াকে ফোন করে আরও এক লাখ টাকা চায় লিয়াকত, না দিলে অমঙ্গল হবে বলে জানায়। এরপর মঙ্গলবার রোকেয়া থানায় অভিযোগ করলে আমরা তদন্তে নেমে লিয়াকতকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিয়াকত ৬৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সত্যতা স্বীকার করেছে। আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধার করা যায়নি। টাকা নাকি সে দান করে দিয়েছে। তবে স্বর্ণের পাতিলের অর্ধেক দেয়া সংক্রান্ত জুডিসিয়াল স্ট্যামপগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর