সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গুল্টা হাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এই অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের প্রমাণ লোপাট করতে খাজনার রশিদে টাকার পরিমাণ না লিখে পরিশোধ লেখা হচ্ছে। আর হাটে মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার জনস্বাস্থ্য।
তাড়াশ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, উপজেলায় মোট ২৯টি হাট রয়েছে তারমধ্যে গুল্টা হাট এ উপজেলায় দ্বিতীয় বৃহত্তম হাট। মোট ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যে ঠিকাদার গিয়াস বাংলা (১৪২৭) সনে এক বছরের জন্য ইজারা নেন হাটটি। সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার এখানে গরুর হাট বসে। উপজেলা হাটবাজার ইজারা বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত খাজনা গরু-মহিষের ক্ষেত্রে ২৫০ টাকা, ছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবং জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত হারে টোল আদায়ের তালিকা হাটে জনসম্মুখে লাগাতে হবে। সরজমিন গত মঙ্গলবার হাটে গিয়ে দেখা যায় ইজারাদারের লোকজন হাটের বিভিন্ন প্রান্তে টেবিল নিয়ে বসে ইচ্ছামতো খাজনা আদায় করছে।
উপজেলার ভাদাশ গ্রামের চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার হাটে কোরবানির জন্য ৫৬ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় গরু কিনেছি, ইজারাদারের লোকজনকে গরুর খাজনা বাবদ ২৫০ টাকা দিতে চাই এতে ইজারাদারের লোকজন বেঁকে বসেন। অবশেষে তাদের ধার্যকৃত ৪৫০ টাকা খাজনা দিয়ে রশিদ নিতে বাধ্য হয়েছি। তিনি বলেন সরকারি নির্ধারিত হারে টোল আদায় করার কথা অথচ ইজারাদার ক্ষমতার দাপটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছে। ফলে হাটে গরু মহিষ কিনতে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। একই অভিযোগ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর গ্রামের ফয়েজ উদ্দীনের, পাঁচতলী গ্রামের বাবুল আহম্মেদের জামাইল গ্রামের লিয়াকত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, একটি গরু কিনে ৫০০-৭০০ টাকা খাজনা দিতে হচ্ছে ইজারাদারের লোকজনকে।
কোরবানির জন্য ছাগল কিনতে আসা তাড়াশ গ্রামের হাফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ১৫ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনলাম অথচ খাজনা দিতে হচ্ছে ২৮০ টাকা বিষয়টি দেখার কেউ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইজারাদারের নিয়োগকৃত রশিদ লেখক (মহরি) বলেন, হাটের ইজাদার গিয়াস ভাই রশিদে খাজনা আদায়ের জায়গা ফাঁকা রেখে পরিশোধ ও ক্রেতা- বিক্রেতাদের নাম, ঠিকানা এবং পশুর মূল্য লিখতে বলেছে। তার নির্দেশ মেনে সেভাবেই রশিদ লেখা হচ্ছে। হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের দায়ে অভিযুক্ত হাট ইজারাদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, খাজনা ৫শ’ টাকা নেবো ৭শ’ টাকা নেবো এটা সাংবাদিকদের দেখার বিষয় নয়। অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন অবগত আছেন। এদিকে মহামারি করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় এবং হাটে আগত জনসাধারণের সচেনতার জন্য মাইকিংয়ের নির্দেশনা থাকলেও ইজারাদার তার কিছুই করেননি। এবিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও হাট বাজার ইজারা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইফফাত জাহান গত ১৩ই জুলাই মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সরকার নির্ধারিত হারের বেশি খাজনা আদায়ের প্রমাণ পেলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।