সরকারি হাসপাতালগুলো নরকে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে এমনভাবে বিল ওঠানো হয় যে, মানুষ বেঁচে থাকলেও মরার মত হয়ে যায়। মানুষ মরে যায় যাক, নিজে বাঁচি- এটা হচ্ছে সরকারের নীতি। তিনি বলেন, এক ভয়ংকর মরণব্যাধি বেষ্টনীর মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ বাস করছে, এই বেষ্টনী ভাঙারও আহ্বান জানান রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত করোনা সনদ বিক্রি, অর্থ ও মানবপাচার এবং মহাদুর্নীতি প্রকোপ বৃদ্ধির প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটা পাপুলকে কুয়েতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো কত পাপুল যে তৈরি হয়েছে সেটা বলা মুশকিল। দূঃশাসনের মাধ্যমে এগুলো তৈরি হবে, পাপুলরা এমপি হবে।
তাদের পক্ষে রাস্তা থাকবে।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরা থেকে রিজেন্টের হাসপাতালের মালিক শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এটা কিন্তু কেউ বিশ্বাস করে না। আবার ফেসবুকে যদি কেউ কিছু লেখে তাহলে রাতের অন্ধকারে ছেলে হোক, মেয়ে হোক তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে আসে। প্রতিবাদ বন্ধ করার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে আসা হয় কিন্তু স্বীকার করা হয় না। তিনি বলেন, যে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করে না, সে সরকার সবকিছু করতে পারে। এই শাহেদ-সাবরিনা কোথায় ছিলো? তারা একত্ববাদী একদলীয় শাসনব্যবস্থা সরকারের অধীনে লালিত পালিত হয়েছে।
রিজভী বলেন, স্কুল কলেজ হাসপাতাল সমাজসেবার প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করেছে সরকার। কারণ এখনও কিন্তু মেগা প্রজেক্ট হয়েছে। এখান থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের পকেট ভারী হয়। তাই তারা মেগা প্রজেক্ট সোনার হরিণের মতো আগলে রাখে। আজ হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ নেই, মাস্ক নেই, তারা নকল মাস্ক নিয়ে এসেছে। ভেন্টিলেটর বর্তমানে জীবন বাঁচানোর একটি মাধ্যম সেটিও নেই আর এইসব দুর্নীতির সাথে মন্ত্রী নেতাকর্মী এমনকি মন্ত্রীর ছেলেরাও জড়িত। তাই মানুষ মরছে রাস্তায়, এম্বুলেন্সে। তিনি বলেন, আজকে টিউশন ফি বাতিলের দাবি উঠেছে। এমনিতেই ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারছে না, তারপরে টিউশন ফি পুরোপুরি দিতে হবে। এ জন্য অভিভাবকরা টিউশন ফি বাতিলের দাবি জানিয়েছে কিন্তু সেদিকে সরকার কর্ণপাত করছেন না। আর যদি মেগা প্রজেক্ট তাড়াতাড়ি করার দাবি ওঠতো, তাহলে তারা খুব দ্রুত কর্ণপাত করতে। কারণ এখানে তাদের নেতাকর্মীদের পকেট ভারী হয়। একটা মেগা প্রজেক্টের ফলে প্রতিবছর ১০-১৫ গুণ অর্থ বেড়ে যায়, কারণ এই টাকাগুলো তাদের নেতাকর্মীদের পকেকে যায়। আর এই কারণে মেগা প্রজেক্ট এর প্রতি তাদের এত গুরুত্ব।
রিজভী বলেন, আজ বিএনপি সামর্থ অনুযায়ী ত্রাণ পিপিই এবং তাদের ডাক্তাররা মানুষদেরকে সাহায্য করছে, এটা সরকারের সহ্য হয় না। এটা না সহ্য হওয়ার কারণে এখন শুরু হয়েছে মিথ্যা মামলা। কারণ প্রতিবাদ করলেই বেরিয়ে আসবে শাহেদ-সাবরিনার মত রূপকথা। এই ১২ বছরে আরো কত শাহেদ-সাবরিনা তৈরি করে রেখেছে তা বলা মুশকিল। তারা তো অনেক আগেই আজিমপুর কবরস্থানে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ- সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় মানবান্ধনে দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, তাঁতীদলের যুগ্ম-আহ্বয়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, স্বেচ্ছাসেবক দল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।