গত বছর অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। গত নির্বাচনের আগ দিয়ে এনএইচএস (জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা) সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর সরকারি নথিপত্র অজানা উপায়ে বিরোধী দল লেবারের হাতে চলে যায়। ওই নথিপত্রগুলো অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়ে সেগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করার পরিকল্পনা ছিল রুশদের। এমনটা দাবি করেছেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, এই প্রথম বৃটিশ সরকারের কোনো মন্ত্রী স্বীকার করলেন যে, গত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা চালিয়েছিল রাশিয়া। এক লিখিত বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার রাব বলেন, ব্যাপক বিশ্লেষণের পর সরকার এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এটা প্রায় নিশ্চিত, রুশরা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়া স্পর্শকাতর সরকারি নথিপত্র অনলাইনে ফাঁস করে ২০১৯ জাতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিল।
বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কয়েক মাস ধরে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে যে, কিভাবে তৎকালীন লেবার প্রধান জেরেমি করবিন এনএইচএস সংশ্লিষ্ট ৪৫১ পৃষ্ঠার নথিপত্রগুলো পেয়েছিলেন। নথিপত্রগুলোর মধ্যে, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া কয়েক মাসের ই-মেইলও ছিল। করবিন সে সময় বলেছিলেন, নথিপত্রগুলো অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি পরিকল্পিত মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় এনএইচএসও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
রাব জানান, বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছেন তিনি।
আর কয়েকদিন পরই পার্লামেন্টের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা কমিটির রাশিয়া বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে। রিপোর্টটি নির্বাচনের আগ দিয়ে প্রকাশে বাধা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ধারণা করা হচ্ছে, সরকারের একজন বিশেষ উপদেষ্টার ব্যক্তিগত ই-মেইল একাউন্ট থেকে ওই নথিপত্র হাতিয়ে নিয়েছিল হ্যাকাররা। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডিটে পোস্ট করা হয়। কয়েক সপ্তাহ নথিপত্রটি রেডিটে ছিল। গ্রেগরিয়াটর নামের একজন টুইটার ব্যবহারকারী রেডিট পোস্টটি বেশ কয়েকজন তারকা ও সাংবাদিকের নজরে আনার চেষ্টা করেন। শেষমেষ একটি লেবার সমর্থনকারী সংস্থার নজরে আসে পোস্টটি। তাদের মাধ্যমে লেবারের হাতে পৌঁছায় নথিপত্রগুলো।
রাব বৃহস্পতিবার বলেন, গত নির্বাচনের আগ দিয়ে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ক স্পর্শকাতর নথিপত্র অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম রেডিটের মাধ্যমে অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এসব যখন গতি পায়নি, তখন অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়া উপকরণগুলো নির্বাচনের আগ দিয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে প্রচারণা চালানোর নানা চেষ্টা করা হয়। তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি তদন্ত চলছে।