এক্সক্লুসিভ

এএফপি’র রিপোর্ট

ঢাকায় করোনা কেলেঙ্কারি পরীক্ষায় আস্থা কমছে মানুষের

মানবজমিন ডেস্ক

২০২০-০৭-২২

করোনাভাইরাসের ভুয়া পরীক্ষা। এমন স্ক্যান্ডাল বা কেলেঙ্কারির কারণে এখন বাংলাদেশিরা আস্থা হারিয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষা পরিহার করছেন। এই কেলেঙ্কারিতে এক ডজনেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকায় দুটি হাসপাতাল ও পরীক্ষাকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কেলেঙ্কারির কারণে জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষা করানো মানুষের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বার্তা সংস্থা এএফপি’র রিপোর্টে এসব কথা বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, জুনে প্রতিদিন করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করানো হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার মানুষের। কিন্তু গত দু’সপ্তাহে এই সংখ্যা ১০ হাজারের সামান্য বেশি। পরীক্ষা ছাড়াই হাজার হাজার রোগীকে ভাইরাসমুক্ত এমন ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়ার অভিযোগে ঢাকায় একটি হাসপাতালের মালিক মো. শাহেদ সহ এক ডজনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপরই পরীক্ষা করানো রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র নাসিমা সুলতানা এই কম রোগীর বিষয়ে বলেছেন, জনগণের মধ্য থেকে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক চলে গেছে। তিনি বলেছেন, বর্ষার কারণে, পরীক্ষায় ২০০ করে টাকা নেয়ার কারণে এবং করোনাভাইরাস ধরা পড়লে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হবে- এই ভয়ে যথাযথভাবে পরীক্ষা করা থেকে বিরত থাকছে লোকজন। তিনি আরো জানান, করোনায় মৃত্যুহার অনেক কম। সরকারিভাবে এই হার শতকরা ১.২৮। মানুষজন ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলেই বাড়িতে অবস্থান করাকেই বেছে নিচ্ছে।
কিন্তু তার সঙ্গে একমত নন রাষ্ট্র পরিচালিত ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্সের সাবেক প্রধান মুজাহেরুল হক। তিনি মনে করেন, ভুয়া পরীক্ষার অভিযোগের কারণে জনগণের মধ্যে অনাস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে ঢাকায় দুটি হাসপাতাল ও পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এ অভিযোগে। এএফপিকে তিনি বলেন, এর ফলে এসব পরীক্ষা কেন্দ্রের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এর ফলে পরীক্ষা করানো থেকে বিরত থাকতে জনগণ দৃঢ়ভাবে অনুৎসাহিত হচ্ছে।
ঢাকার একজন ব্যাংকার মুমিনুর রহমান। তিনি এএফপিকে বলেছেন, তিনি এসব পরীক্ষা মোটেও বিশ্বাস করেন না। কারণ, তার ৪২ বছর বয়সী এক ভাইকে মধ্য জুনে করোনার লক্ষণযুক্ত অসুস্থতায় মারাত্মকভাবে ভুগলেও তাকে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এর এক সপ্তাহ পরে তার ভাই মারা যান। মুমিনুর রহমানের এক শ্যালিকা জুলাইয়ের শুরুর দিকে ৩৪ বছর বয়সে একই প্রক্রিয়ায় মারা যান। অথচ পরীক্ষায় তাদের কারো করোনাভাইরাস ধরা পড়ে নি। মুমিনুল হক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক একজন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, দরিদ্রপীড়িত এই দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার সম্পর্কে সঠিক চিত্র পাওয়ার জন্য জরুরিভিত্তিতে পরীক্ষা বাড়ানো উচিত কর্তৃপক্ষের। প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষের এই দেশে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২ লাখ মানুষের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস্তবে এই সংখ্যা অনেক বেশি হবে।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status