প্রাণঘাতী করোনা মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধা চিকিৎসকরা। করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন তারা, হচ্ছেন আক্রান্ত। প্রাণও খোয়াচ্ছেন অনেকেই। করোনা যুদ্ধে নাম লিখিয়েছেন এক চিকিৎসক নব-দম্পতি। তারা হচ্ছেন- ডা. রিফাত মাহমুদ সরকার ও ডা. নূর-ই-জান্নাত সাবা আশা। দু’জনই রংপুর ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসেন গতবছর ২৭শে ডিসেম্বর। দু’জনই রংপুর মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করলেও বিয়েটা হয়েছে পারিবারিকভাবেই।
তাদের স্বপ্ন ছিল বিয়ের পরে ঘুরতে যাবেন।
কাটাবেন মধুর সময়। কিন্তু সেই স্বপ্নের পথে লাল চিহ্ন এঁকে দেয় করোনা। তারপরেও হাসিমুখে দিয়ে যাচ্ছেন করোনা রোগীদের সেবা।
ডা. রিফাত রহমানের জন্ম দিনাজপুরে। কিন্তু ছোট থেকেই বেড়ে ওঠা রংপুরে। তিনি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার কারণে গত তিন মাস মায়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি তার। তার মা দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশনে ভুগছেন। হয়েছে মাইনর স্ট্রোক। বাড়িতে বাবা-মা একাই থাকেন।
ডা. নূর-ই-সাবা আশার জন্ম রাজশাহীতে। স্বপ্ন ছিল বিয়ের পর প্রথম ঈদটা করবেন শ্বশুর বাড়িতে। কিন্তু না তিনি তার বিয়ের পর প্রথম ঈদ করেছেন হাসপাতালে রোগীদের সেবা করে।
তবে এতে কোনোই আক্ষেপ নেই তাদের। ডা. রিফাত বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাবা-মা আমাকে সব সময় সাহস যুগিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও আমার স্ত্রী ও আশপাশের সবার সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণার ফলেই সেবা দিয়ে যেতে পারছি। তিনি জানান, আমরা করোনা প্রতিরোধে পরিবার হয়ে কাজ করছি। আমাদের এখানে সুস্থতার হার প্রায় ৮০ শতাংশ। এছাড়াও অনেক সংবাদে দেখি চিকিৎসকদের আবাসন নিয়ে নানা সমস্যার কথা। কিন্তু আমাদের বাড়িওয়ালা থেকে প্রতিবেশী সকলেই বেশ আন্তরিক।
ডা. সাবা বলেন, চিকিৎসকদের প্রধান লক্ষ্যই মানুষের সেবা দেয়া। চিকিৎসকদের সবসময় প্রস্তুত থাকা উচিত মানুষের সেবায়। একটা ক্রান্তিকালে সম্মুখযোদ্ধা হতে পেরে আমি ধন্য। আমাদের সেবায় যখন কেউ সুস্থ হয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন সেটাই আমাদের প্রাপ্তি।