× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দ্য হিন্দুকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন /পাকিস্তান ডায়াল করলে রং কোথায়?

প্রথম পাতা

নিজস্ব প্রতিনিধি
২৯ জুলাই ২০২০, বুধবার

বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক ভাঙতে পারে, এমন কোনো সম্ভাবনা রোধ করার জন্য ভারত সরকার এবং ভারতীয় সমাজের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন। গত রোববার তিনি ঢাকা থেকে টেলিফোনে ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, আগামী ৫ই আগস্ট অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের কাজ উদ্বোধনের তারিখ ধার্য্য আছে।
২৭শে জুলাই দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনের মতে, বাংলাদেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই উদ্বোধনকে সামনে রেখেই এমন মন্তব্য করেছেন। এরপর পত্রিকাটির নিজস্ব মন্তব্য হলো, ‘বাংলাদেশি ভাষ্যকারগণের মতে, শেখ হাসিনার কট্টরপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য ওই উপলক্ষ্যটি (রাম মন্দির নির্মাণ) একটি নতুন রাজনৈতিক সুযোগ এনে দেবে।
জনাব মোমেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পাকিস্তানি সমকক্ষ ইমরান খানের মধ্যে গত সপ্তাহের ফোনের কথোপকথন সম্পর্কে বলেন, এই আলোচনায় অস্বাভাবিক কিছু হয়নি।
জনাব মোমেনের কাছে দ্য হিন্দু জানতে চেয়েছিল, রাম মন্দির নির্মাণে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া কি হবে?
উত্তরে মোমেন বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ একটি ঐতিহাসিক এবং অভিন্ন ধমনী সম্পর্কের উত্তরাধিকার বয়ে চলছে। আমরা এই মন্দির নির্মাণকে কেন্দ্র করে সেই সম্পর্কের ক্ষতি করতে দেবো না। তবে আমি এখনো অনুরোধ করবো যে, ভারতের এমন কোনো উন্নয়নের অনুমতি দেয়া উচিত নয়, যা আমাদের সুন্দর এবং গভীর সম্পর্ককে ভাঙতে পারে। এটি আমাদের উভয় দেশের জন্যই সমীচীন। এবং আমি বলবো উভয় পক্ষকেই এমনভাবে কাজ করা উচিত যাতে এ জাতীয় বাধাগুলো প্রতিহত করা যায়।
জনাব মোমেন আরো বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিটি স্তরের পক্ষ থেকেই দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখতে হবে।
‘আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আপনার সমাজেরও একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
কেবল সরকার একা এ জাতীয় সম্পর্ক গড়তে বা ধরে রাখতে পারে না। জনগণ এবং গণমাধ্যমগুলোরও এই সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মনোযোগী থাকতে ভূমিকা রাখতে পারে।’ মন্তব্য করেছেন মি. মোমেন।
দ্বি-জাতি তত্ত্ব
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ও প্রবীণ বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন। কারণ তারা মনে করেন বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এই নির্মাণ বাংলাদেশের জনগণের ওপর আবেগময় প্রভাব ফেলবে।
‘একাত্তরে বাংলাদেশ দ্বি-জাতি তত্ত্বের যে রাজনীতি থেকে সরে এসেছিল, এখন এর ফলে আবার সেইদিকে ঘুরে যাওয়ার একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। আমরা এই তত্ত্বটি নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। তবে প্রমাণ থেকে বোঝা যায় যে, ভারত দ্বি-জাতি তত্ত্বের দিকে এগিয়ে চলেছে, এই মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি রাম মন্দির পর্বের ঘটনাবলির দ্বারা বাংলাদেশ সম্পর্কে আঘাত আসা বা ওই ঘটনার স্পিলওভার বা তার উপচে পড়া প্রভাব রোধে ভারতকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।  
চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা একটি সুশীল জোটের মুখপাত্র ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেছেন, অযোধ্যায় পরিকল্পিত মন্দির নির্মাণের কারণে বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তিগুলো আগামী সপ্তাহগুলোতে নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পাবে।
‘যখনই মৌলবাদী শক্তির সমৃদ্ধি ঘটে, তখন ভারত এবং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভোগেন এবং আসন্ন অনুষ্ঠানটি নাটকীয়ভাবে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক লবির শক্তি বাড়িয়ে তুলবে।
জনাব মোমেন ঢাকার বিভিন্ন ঘটনা ধারাবাহিকভাবে হাইলাইট করার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে, এ রকম ধারণা তৈরির জন্য ‘স্বার্থান্বেষী মহলকে’ দায়ী করেন।
একটি খবরে বলা হয়েছে, ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বারবার চেষ্টা করেও শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, কোভিড-১৯ এর হুমকির কারণে বৈঠকটি কার্যকর হয়নি। ‘মহামারির এই সময়ে নেত্রী শেখ হাসিনার সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যের নিরাপত্তায় আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর বেশিরভাগ কর্মসূচি ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে স্থানান্তরিত হয়েছে। একটি সূত্র বলেছে যে, মহামারি পরিস্থিতির উন্নতির পরে এ ধরনের সাক্ষাৎকারগুলো আবার শুরু হবে।
বাংলাদেশ-পাকিস্তানের বাস একই বিশ্বে
জনাব মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ সকলের সঙ্গে আঞ্চলিক শান্তি ও বিশেষজ্ঞ সংলাপকে সমর্থন করে আসছে। এবং গত সপ্তাহে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে টেলিফোন আলাপ ছিল সৌজন্যমূলক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, পাকিস্তান যদি আমাদের ডায়াল করে তাহলে রং কোথায়? তারা যদি একটি টেলিফোন কল করে তাহলে সেখানে সমস্যা হবে কেন? সর্বোপরি আমরা তো একই বিশ্বে বাস করি। জনাব মোমেন এই ফোন কলকে অতিরঞ্জিত করার জন্য মিডিয়াকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, উভয় নেতা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
দি হিন্দু বলেছে, পাকিস্তান বলেছে মি. খান কাশ্মীর ইস্যু তুলেছিলেন। বাংলাদেশ অবশ্য কাশ্মীর সম্পর্কে নীরবতা বজায় রেখেছে এবং বলেছে যে, কথোপকথনটি কোভিড-১৯ সম্পর্কিতই থেকেছে। বাংলাদেশের তরফে কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসাবে বিবেচিত হওয়ার কারণে ভারত ঢাকার অবস্থানের প্রশংসাই করেছে। উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকার মিডিয়ার বরাত দিয়ে দ্য হিন্দুর একটি হেডলাইন ছিল, ভারতের হাইকমিশনার চেষ্টা করেও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর