জার্মানি থেকে প্রায় ১২ হাজার মার্কিন সেনা সরানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, প্রতিরক্ষা খাতে জার্মানির কম খরচ করার শাস্তিস্বরূপ এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলের অংশ হিসেবে সেনাদের সরানো হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, সবমিলিয়ে ১১ হাজার ৯০০ মার্কিন সেনা সরানো হবে জার্মানি থেকে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪০০ সেনা ফিরে যাবে যুক্তরাষ্ট্রে। তাদের ইউরোপের পূর্বাঞ্চলসহ বিশ্বজুড়ে অন্যত্র মোতায়েন করা হবে। বাকি ৫ হাজার ৬০০ সেনাকে মোতায়েন করা হবে ইতালি ও বেলজিয়ামসহ অন্যান্য ন্যাটো সদস্যদেশগুলোয়।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার মঙ্গলবার জানান, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জার্মানি থেকে সেনা সরানো শুরু হবে। তবে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি তিনি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, জার্মানিকে প্রতিরক্ষা খাতে কম খরচ করার শাস্তি হিসেবে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তবে এসপার এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, ন্যাটোকে আরো শক্তিশালী করতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা বৃদ্ধি করতে ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর অপশন বৃদ্ধিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
পেন্টাগনের বিবৃতি প্রকাশের কিছুক্ষণ পরই এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, জার্মানি প্রতিরক্ষা খাতে যথেষ্ট খরচ না করে অবহেলাপূর্ণ আচরণ করছে। তাই তিনি এই সেনা সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মার্কিন সেনারা সেখানে আছে জার্মানিকে সুরক্ষা দিতে, ঠিক? আর জার্মানি এ সুরক্ষার জন্য অর্থ পরিশোধ করছে না। আমরা চাই না আমাদের এভাবে চুষে খাওয়া হোক। বাণিজ্য ও সামরিক, উভয় খাতে ২৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তো আমরা এবার সেনা সরিয়ে নিচ্ছি, কারণ তারা তাদের বিল পরিশোধ করছে না।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প পূর্বে বহুবার ভুল দাবি করেছেন যে, ন্যাটো সদস্য হিসেবে জার্মানি তাদের বিল পরিশোধ করছে না। আদতে, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ন্যাটোর বিল পরিশোধ নিয়ে, জাতীয় প্রতিরক্ষা খাতে অর্থ খরচ নিয়ে। ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়, ২০২৪ সালের মধ্যে তারা তাদের জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করবে। বর্তমানে জার্মানি তাদের জিডিপির ১.৫ শতাংশ ব্যয় করছে প্রতিরক্ষা খাতে। কিন্তু বেলজিয়ামের ক্ষেত্রে এই খরচের হার ১ শতাংশেরও কম ও ইতালির ক্ষেত্রে তা ১.২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাদের ইউরোপিয়ান কমান্ডের সদরদপ্তরের অংশবিশেষ সরিয়ে নেয়া হবে বেলজিয়ামে ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পরিচালনাকারী একটি স্কোয়াড্রন ও দু’টি আর্মি ব্যাটালিয়ন সরিয়ে নেয়া হবে ইতালিতে। কূটনৈতিকদের দাবি, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েই সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছেন ট্রাম্প।