× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হারুনার রশিদ খান মুন্নুর চলে যাওয়ার ৩ বছর

বাংলারজমিন

রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
৩১ জুলাই ২০২০, শুক্রবার

মানিকগঞ্জের সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং ভালবাসার মানুষ সাবেক মন্ত্রী মরহুম হারুনার রশিদ খান মুন্নুর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর তারিখটি পড়েছে ঈদের দিন অর্থাৎ ১লা আগস্ট। ঈদের দিনটি খুশির দিন হলেও মুন্নু পরিবারের কাছে দিনটি শোকের। পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যের মাথার মুকুট ছিলেন তিনি।
বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের বড় কন্যা মুন্নু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আফরোজা খান রিতা। বাবা ছিলেন তার আদর্শ এবং চোখের মণি।  ছোট থেকেই বাবার সেই আদর্শ অনুসরণ করেই আফরোজা খান রিতা পথ চলছেন। সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে, প্রথম সন্তান যদি মেয়ে হয়, তাহলে সে সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে আসে। অর্থাৎ বাবার কাছে আফরোজা খান রিতা ছিলেন সৌভাগ্যের প্রতীক। রিতা বাবার সততা আর আদর্শে বেড়ে উঠেছেন। বাবা ছিলেন তার অহংকার।
তাই বাবার কথা মনে করে তিনি এখনো কাঁদেন। তবে বাবা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে তিনি বাবার যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। শিক্ষাজীবনে বাবার মতো আফরোজা খান রিতাও ছিলেন মেধাবী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়ার সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করার পরপরই বাবার ব্যবসা-বাণিজ্যে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। মেয়ের প্রতি বাবার আস্থা ও ভরসা ছিল পুরোটাই। বাবা নেই তাই বাবার স্বপ্নের সঙ্গে নিজের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করাটাই তার মূল লক্ষ্য এখন। বাবার আদর্শ, কর্ম, উদ্দীপনা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিজের ভেতর লালন করেছেন। সেই আদর্শের দীক্ষাতেই আফরোজা খান রিতা এগিয়ে যাচ্ছেন। যার কারণে হয়ে উঠেছেন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। বাবার হাতেগড়া প্রতিষ্ঠান মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মুন্নু ফেব্রিক্‌্র, মুন্ন অ্যাটায়ার, মুন্নু জুটেক্‌্র, মুন্নু স্টাফলার্স, মুন্নু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মুন্নু নার্সিং কলেজসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দক্ষ হাতেই সামাল দিয়ে যাচ্ছেন।  আফরোজা খান রিতা তার বাবা সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, একটি মুহূর্তের জন্য আমার বাবাকে  ভুলতে পারি না। তাকে ছাড়া সব কিছুই যেনো খাঁ খাঁ করে। ঘরে বাইরে যে দিকেই তাকাই শুধুই বাবার স্মৃতি ভেসে ওঠে। আমার বাবা ছিলেন একজন আদর্শবান মানুষ এবং আদর্শবান পিতা। ছিলেন আমাদের অহংকার, আমার আদর্শ এবং আমার পরিবারের বটগাছ। শিশুকাল থেকেই যার শীতল ছায়ায় একটু শান্তির নীড় খুঁজে পেতাম। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের পুরো পরিবারকে ছায়া দিয়ে রেখেছিলেন। বাবার অভাব আর স্মৃতিগুলো সর্বক্ষণ তাড়া করে বেড়ায়। বাবাকে হারানোর কষ্ট আমি কাউকে বোঝাতে পারবো না। মুন্নু গ্রুপের চেয়ারম্যান মরহুম হারুনার রশিদ খান মুন্নু রাজনীতিতে ছিলেন একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ। রাজনীতি করতে গিয়ে কখনোই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল বলেই চারবার সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হয়েছেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০১ সালের নির্বাচনে সাবেক মানিকগঞ্জ-২ ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনে একইসঙ্গে নির্বাচন করে দু’টি আসনেই জয়লাভ করে তার জনপ্রিয়তার কারিশমা দেখান। বিএনপির বর্ষীয়ান নেতা ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল বাতেন মিয়া বলেন, হারুনার রশিদ খান মুন্নু ছিলেন মানিকগঞ্জের নক্ষত্র।  বিএনপির জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিলেন। তার সঙ্গে বহু বছর একসঙ্গে রাজনীতি করার সৌভাগ্য হয়েছে। দেখেছি মানুষটি কখনোই নিজেকে নিয়ে ভাবতেন না। তার ভাবনার মধ্যে ছিল শুধুই মানবসেবা।
জেলা বিএনপির বর্ষীয়ান নেতা অ্যাডভোকেট মোখসেদুর রহমান বলেন, হারুনার রশিদ খান মুন্নুর অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আধুনিক মানিকগঞ্জ গড়ার একজন প্রাণ পুরুষ ছিলেন তিনি। মানিকগঞ্জের বুকে যখন কোনো মেডিকেল কলেজ ছিল না তখন তিনিই প্রথম মুন্নু মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি চাওয়া-পাওয়ার রাজনীতি কখনোই করেননি। সবসময় তিনি শুধু দিয়েই গেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর