সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি জমিদার বাড়ির চারপাশের শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশতাধিক মৎস্যচাষি ও জেলেরা। গত মঙ্গলবারের টানা তিন ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভেসে যায় ৫ কোটি টাকার মাছ। ভেসে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে আরো অর্ধশতাধিক পুকুর। এদিকে সাটুরিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসে বন্যায় তলিয়ে যাওয়া পুকুরের সঠিক হিসাব হচ্ছে ১৫৪টি পুকুর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্যচাষির ক্ষতি দেখানো হয়েছে ৫৮ লাখ টাকা। বন্যায় তলিয়া যাওয়া পুকুরের মালিকরা জানিয়েছে ৫ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। তবে মৎস্যচাষিরা দাবি করেন, অফিসের তথ্য সঠিক নয়।
বালিয়াটি ইউনিয়নের গর্জনা গ্রামের মৎস্যচাষি বাছেদ মিয়া এবার ১৬টি পুকুর প্রায় ৩০ লাখ টাকা দিয়ে কিনে মাছ চাষ করেন। এ বন্যায় তার ১৬টি পুকুরই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ভেসে গেছে ৫০ লাখ টাকার মাছ। বালিয়াটি গ্রামের দোয়াত আলী বিদেশ থেকে এসে এলাকার বিভিন্ন পুকুর কিনে মাছ চাষ করেন। এবার তার ৬টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ছয়টি পুকুর থেকে তার ২০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এখন সে পানিতে ডোবা পুকুরের পাশে বসে কাঁদছে। বালিয়াটি ভাটারা গ্রামের মাহাম আলী ১০টি পুকুরে মাছ চাষ করেন। গত মঙ্গলবার দুপুরের টানা তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে ১০টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যায়। ওই পুকুরে সে ৩০ লাখ টাকার মাছ কিনে চাষ করছিল। এখন তার সব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছে। খলিলাবাদ গ্রামের ফারুক হোসেনের ৩টি, নুরুল ইসলামের ৫টি, লোকমানের ৬টি, ওয়াছেলের ১টি, ওমর আলীর ১টি, আমিনুর রহমানের ৪টি, স্বপনের ৪টি, সালামের ৫টি, সেলিমের ৪টি, মাসুমের ৪টি, ওসমানের ২টি, লালমিয়ার ২টি, নোয়াব আলীর ২টি, তালেমের ২টি, মোশারফের ৪টি, গোলাপের ৩টি, শুকরা মিয়ার ২টি, নয়া মিয়ার ৩টি, ওসমান গণির ১টি, সায়েদুর রহমানের ৩টি, সানোয়ারের ৩টি, আমজাদের ১টি, আরফান আলীর ২টি, আরশেদ আলীর ১টি ও জুয়েল মিয়ার ২টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
এ ছাড়া আরো ছোট বড় ৪০টি পুকুরের মাছ ডুবে গেছে।
সাটুরিয়ার মৎস্য কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ জহুরা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের জন্য কোনো প্রণোদনা নেই। যদি কোনো সহযোগিতা পাই তাহলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে। তবে মৎস্যচাষি ও সরকারি হিসাবের মিল নাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের পুকুর ডুবে গেছে তারা আমাদের কাছে খবরটি পৌঁছায়নি। যে কারণে অনেক সময় তথ্যর মিল হয় না বলে জানান।