মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নির্যাতন নিয়ে আল-জাজিরায় রায়হান কবিরের দেয়া বক্তব্যের জেরে তার নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধেও তদন্ত চালুর ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটিতে সাক্ষাতকারের পর মালয়েশিয়া সরকারের আক্রোশের শিকার হন বাংলাদেশি কর্মী রায়হান কবির। তাকে আটকের পর ১৪ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। এবার তার নিয়োগদাতার বিরুদ্ধেও তদন্ত চালুর নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ এ কথা জানান। তার বরাত দিয়ে মালয় মেইল জানিয়েছে, গত ১৩ই জুলাই রায়হান কবিরের নিয়োগকর্তার কাছে এ বিষয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তাকেও তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
হামজাহ বলেন, যেসব নিয়োগকর্তা ও বিদেশি কর্মী মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন অমান্য করবে তাদেরকেই নির্বাসিত করা হবে।
রায়হান কবিরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ অনুযায়ী দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ যে কোনো বিদেশি কর্মীর বিরুদ্ধে এ ধরণের ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি দাবি করে বলেন, আমরা চাইলেই যাকে আমরা মালয়েশিয়ায় দেখতে চাই না তাকেই ফেরত পাঠাতে পারি। রায়হান কবিরকে তিনি 'আনওয়ান্টেড' বলে আখ্যায়িত করেন। গত ২৪ জুলাই রায়হান কবিরকে আটক করে মালয়েশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। এর আগে দুই সপ্তাহ ধরে তাকে ধরতে অভিযান চলে দেশজুড়ে। তাকে চিরদিনের জন্য মালয়েশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
আল-জাজিরার কার্যালয়ে অভিযানএদিকে, কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার কুয়ালালামপুর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে মালয়েশিয়ার পুলিশ। এসময় সেখান থেকে একাধিক ক¤িপউটার জব্দ করা হয়। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আল-জাজিরা। গণমাধ্যমটির দাবি, মালয়েশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে এটি সরকারের আরেকটি বড় চেষ্টা।
আল-জাজিরার বিরুদ্ধে মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও আইনভঙ্গের অভিযোগ এনেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে জোর তদন্ত চলছে সেখানে। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবারের ওই অভিযান চালানো হয়। রায়হান কবিরের সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়া ১০১ ইস্ট নামের আল-জাজিরার একটি প্রোগ্রাম নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। এতে মালয়েশিয়ায় থাকা অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি দেশটির কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপরই মালয়েশিয়া সরকারের টার্গেটে পরিণত হয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এ গণমাধ্যমটি।
মালয়েশিয়ায় আল-জাজিরার কার্যালয়ে অভিযান প্রসঙ্গে গণমাধ্যমটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিলস ট্রেন্ডেল বলেন, এ ঘটনায় ভীষণ উদ্বিগ্ন তারা। কারণ, যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে কারাদ- ও বড় ধরণের জরিমানার ঝুঁকি রয়েছে। তিনি মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে আল-জাজিরার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত থামানোর আহবান জানান।