× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহত / পুলিশের মামলার সঙ্গে সেনাবাহিনীর ‘প্রাথমিক তদন্তের’ বক্তব্য একবারেই বিপরীত: টিআইবি

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার
(৩ বছর আগে) আগস্ট ৫, ২০২০, বুধবার, ৭:৩৩ পূর্বাহ্ন

সম্প্রতি কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের করা একাধিক মামলার সঙ্গে সেনা বাহিনীর ‘প্রাথমিক তদন্তের’ বক্তব্য একেবারেই বিপরীত বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, এই বৈপরীত্যগুলো যথাযথভাবে আমলে নিয়ে গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে, আদতেই পুলিশ ‘আত্মরক্ষার্থে’ গুলি চালিয়েছিল কী-না। বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে কঠোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করে টিআইবি। একইসঙ্গে নিহতের সঙ্গী শিক্ষার্থী ও অন্যসকল সম্ভাব্য সাক্ষীর নিরাপত্তাসহ সকল অধিকার নিশ্চিত করারও দাবি তাদের। আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।  

টিআইব বলছে, একে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই, বরং তা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংস্কৃতিকে স্বাভাবিকতায় রূপান্তরের একটি উদাহরণ মাত্র। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,  ২০১৮ সালের ৪ঠা মে থেকে সারা দেশে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে গত ৩০শে জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র্যা বের সঙ্গে শতাধিক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন।
অথচ দেশের সংবিধান সব নাগরিকের আইনি সুরক্ষা পাওয়ার যে অধিকার দিয়েছে, তাতে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকলেই কাউকে বিনা বিচারে হত্যা করার কোনো অধিকার দেয়া হয়নি। নিহতদের বেশ কয়েকজন কোনোভাবেই ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, এমন তথ্য-প্রমাণ নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি চাঁদা দেয়া না হলে ‘ক্রসফায়ারে দেয়ার’ মতো অভিযোগও খুব কম নয়।

এই বর্বরতার দায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানই এড়াতে পারেনা। দেশে ইয়াবা ব্যবসার লাগাম টানা যায়নি, ‘বড় বড় ক্রিড়নকরা’ এক রকম ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা’ নিয়ে বহাল তবিয়তে আছে। আর পুলিশ বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত এলিট ফোর্স র্যারব, বিজিবি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ও বেশ কিছু ‘নিরপরাধ’ মানুষকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করেছে। এসব ঘটনায় কোনো গ্রহণযোগ্য তদন্ত ও আইনগত পদক্ষেপ না নেয়ায় এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, কার্যত দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বিনা বিচারে হত্যার লাইসেন্স বা দায়মুক্তি পেয়ে গেছে।
পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনাকে এই সামগ্রিক পরিস্থিতির আলোকেই বিবেচনা করতে হবে। কারণ দেশের সংবিধান যেখানে কোনো নাগরিককেই বিনা বিচারে হত্যার অনুমোদন দেয় না, সেখানে ‘দায়মুক্তির’ অপব্যবহারের বিষয়টিও অবান্তর।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আশা করে সরকার এই ঘটনার সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিনা বিচারে হত্যার সংবিধানবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসার কার্যকর উদ্যোগ নেবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজেদের মর্যাদা ও জনআস্থা সমুন্নত রাখার স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তার সহকর্মী তিন শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর