করোনাভাইরাসের মহামারি বিশ্বজুড়ে। সাধারণ জীবন থেকে শুরু করে খেলাধুলা সব কিছুই হয়েছিল স্থবির। এখনো এর প্রভাব ও প্রকোপ কোনোটাই তেমন কমেনি। তবে অনেক দেশ করোনাকে সঙ্গী করেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে ক্রিকেট মাঠে ফিরেছে। শ্রীলঙ্কাসহ কয়েকটি দেশ শুরু করেছে জাতীয় দলের অনুশীলনও। এমনকি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলও শুরু করেছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি। খেলা মাঠে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন।
ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ও আগস্টে সব খেলাধুলা উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে। তবে ব্যতিক্রম চিত্র ক্রিকেটে। ক্রিকেট মাঠে ফেরাতে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ব্যক্তিগতভাবে কিছু ক্রিকেটার অনুশীলন করলেও এখানো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিসিবি। এ বিষয়ে বিসিবির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি কিন্তু উন্নতি হয়নি। যদি করোনা আক্রান্তের সূচক নিম্নগামী হতো তাহলে আমরা চিন্তাভাবনা করতে পারতাম। এখন পরিস্থিতিটা একই রকম আছে, কোথাও কোথাও এর প্রকোপ বাড়ছেও। সেজন্য আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
গতকাল আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামালের ৭১তম জন্মদিনে বিসিবিতে আয়োজন হয় মিলাদ মাহফিলের। সেই অনুষ্ঠানেই সংবাদ মাধ্যমে ক্রিকেট ফেরানোর আশার কথাও জানান জালাল ইউনুস। তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর চিন্তা অনেক দিন ধরেই মাথায় আছে। আমরা পরিকল্পনা করছি কীভাবে করা হয়। এরইমধ্যে ব্যক্তিগত অনুশীলনের অনুমতি দিয়েছি কড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে। অলরেডি একটা পর্ব হয়েছে। সামনেও হবে। এ ছাড়া জাতীয় দলের স্কোয়াডে যারা আছে তাদেরও আস্তে আস্তে যুক্ত করা হবে। খুব শিগগিরই হয়তো তারা মাঠে নামবে। সব কিছুর আগে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। তাদের সেফটির কথা মাথায় রেখে শুরু করতে হবে।’
করোনাভাইরাসের প্রভাবে মার্চ থেকে একের পর এক বাতিল হয়েছে দেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সিরিজ। সেই সব সিরিজ পুনরায় আয়োজনের চেষ্টা করছে বিসিবি। সিরিজ আয়োজন নিয়ে মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী (নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন) এরইমধ্যে বলেছেন, আমরা কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যেসব দেশে খেলা নিরাপদ সেখানে আমরা খেলতে যেতে চাচ্ছি। কথাবার্তা চলছে। করোনার প্রকোপ কম কিংবা নেই বললেই চলে সেসব দেশে আমরা খেলতে যেতে পারি কিনা সেসব নিয়ে আলোচনা চলছে।’ বিশেষ করে জুনে শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার কথা ছিল টাইগারদের। কিন্তু দীর্ঘদিন খেলার মাঠে না থাকায় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মিশনে যেতে রাজি হয়নি বাংলাদেশ। সেই সিরিজটিই ফের আয়োজনে উঠে পড়ে লেগেছে বিসিবি। তবে তার আগে বিপিএল হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। গুঞ্জন রয়েছে অক্টোবরে না হলেও জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে ঘরোয়া ক্রিকেটের এই আসর। এ বিষয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে আশাবাদী। আর বিপিএল ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হিসেবে বিবেচনা করছি। এখানে অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এসে খেলেন। যে পরিস্থিতি তারা আসবেন কি সেটা বড় প্রশ্ন। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা প্রস্তুত কিনা সেটাও জানা জরুরি। আগস্ট মাস যাক। সেপ্টেম্বরে আমরা চিন্তা-ভাবনা করবো। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আমাদের স্লট আছে। সেখানে আমরা আয়োজনের চেষ্টা করবো।’