বৃটেনে চাকরির বাজারে যেন রক্তক্ষরণ। করোনা মহামারির কারণে এক লাখ ৩৫ হাজার বৃটিশ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে। অব্যাহতভাবে বিভিন্ন কোম্পানি লে-অফ ঘোষণা করছে। সর্বশেষ ডব্লিউএইচ স্মিথ ঘোষণা দিয়েছে, তারা কমপক্ষে ১৫০০ কর্মী ছাঁটাই করবে। এর বেশির ভাগই ট্রেন স্টেশনের। কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ, সেখানে কমিউটার এবং অবকাশযাপনের সংখ্যা উভয়ই কমে গেছে। বুধবার রাতে খবর প্রকাশ হয় যে, ইংল্যান্ডে এবং স্কটল্যান্ডে এলজিএইচ যেসব হোটেল ব্যবস্থাপনা করে তার প্রায় ১৫০০ স্টাফ চাকরি হারাতে পারেন। এ সংস্থাটি ক্রাউন প্লাজা, হলিডে ইন এবং হলমার্কের মতো হোটেল ব্যবস্থাপনা করে।
এমন সব খবরে বৃটেনে এক হিম আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনা ভাইরাসের হুমকি বিশ্লেষণে দেখা যায়, শতাধিক বৃটিশ বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দেশের ভিতরে এবং বাইরে দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। পোশাক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এমএন্ডকো তাদের ৪৭টি স্টোর বন্ধ করে দেবে। এতে চাকরি হারাবেন ৩৮০ জন মানুষ। খদ্দেরের অভাবে দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে বুকমেকার উইলিয়াম হিল। সেখানে ১১৯ জন মানুষ কাজ নিয়ে সংশয়ে। এ ছাড়া পিৎজা এক্সপ্রেস, কারিস পিসি ওয়ার্ল্ড, হেজ ট্রাভেল এবং ডিডব্লিউ স্পোর্টস ঘোষণা দিয়েছে তারা কর্মী ছাঁটাই করবে ৪৪৭০ জন। এত বিপুল পরিমাণ মানুষ কর্মসংস্থান হারানোর ফলে সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হবে। এরই মধ্যে বৃটেনে এক তৃতীয়াংশের সামান্য বেশি মানুষ কাজে ফিরেছেন। বাকিরা বাসায় বসে কাজ করছেন। ফ্রান্সে অফিস করছেন শতকরা ৮৩ ভাগ মানুষ এবং জার্মানিতে শতকরা ৭০ ভাগ। এ তথ্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত মর্গান স্ট্যানলের গবেষকদের। তবে বৃটিশরা অন্যদের চেয়ে সপ্তাহে বেশি সময় কাজ করছেন। বৃটেনে প্রায় অর্ধেক (৪৬%) কর্মজীবী সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন অফিস করছেন। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি বা ফ্রান্সের তুলনায় এই সময় অনেক বেশি। অর্থনীতিকে রক্ষা করতে সবার সহায়তা কামনা করে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কর্মীদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। তার দু’সপ্তাহ পরেও হাজার হাজার সরকারি কর্মচারী বাসায় বসে কাজ করছেন। হোয়াইটহলে মিনিস্টারিয়াল ডিপার্টমেন্ট যেন এক ‘ঘোস্ট টাউন’। ডেইলি মেইলের এক অডিটে দেখা গেছে এ সপ্তাহে শতকরা মাত্র ২ ভাগ স্টাফ কাজে ফিরছেন। ডিপার্টমেন্ট ফর এডুকেশন, ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক এন্ড পেনশন্স-এ প্রতিদিন হাতেগোনা কয়েক ডজন মানুষকে প্রবেশ করতে দেখা যায়, এক সময় এসব অফিসে আনাগোনা থাকতো ৩৫০০ স্টাফের।