বগুড়ার শেরপুরে সরকারি ভাবে দেয়া বিনামূল্যের প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ও বিধবা ভাতা সহ দরিদ্র অসহায় মানুষদের জন্য সকল প্রকার ভাতা পাইয়ে দেয়ার জন্য সুবিধা ভোগীদের কাছ থেকে নগদে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শেরপুর উপজেলার ৪নং খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি দল সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জু এবং ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান এর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে এলাকায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদি ওই সকল ঘটনায় সরকারি দলের তথা অপর এক অংশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সহ স্থানীয় এলাকা বাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রতিবাদ সভায় ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিচার দাবি করা হয়। এ নিয়ে গত বুধবার বিকেলে খানপুর গ্রামের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে স্থানীয় কয়েরখালি বাজারে ৪নং খানপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ওই প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসুচিতে খানপুর ইউনিয়নের সুবিধা ভোগী দরিদ্র-অসহায় নারী-পুরুষদের ভাতা পাইয়ে দেয়া সহ ভাতার বই প্রস্তত এবং ব্যাংক একাউন্ট খোলার অজুহাত দেখিয়ে শত শত ভাতা ভোগীদের নিকট থেকে নগদে এক হাজার দশ টাকা করে নগদে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠে ।
সকাল ১০টা থেকে প্রায় ঘন্টাব্যাপি চলা ওই মানববন্ধন কর্মসূচিতে শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোজাম্মেল হক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মান্নান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নুরুল ইসলাম, আব্দুল হালিম, জুয়েল রানা, জাবেদ আলী প্রমূখ কথা বলেন।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সরকারি ভাবে দেয়া বিনামূল্যের সকল প্রকার ভাতা ভোগীদের মধ্যে বেশ কয়েক জন ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ তাদের ভাতার কার্ড পাওয়া নিয়ে ঘুষের টাকা প্রদানের বক্তব্য তুলে ধরেন। কয়েরখালী বাজারে অনুষ্ঠিত মানব বন্ধনে এসময় নানা শ্রেণী-পেশার শতাধিক মানুষ অংশ নেয়।
কর্মসূচিতে বলা হয় শেরপুর উপজেলা সমাজসেবা এবং মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেন্বার খানপুর ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী, মাতৃত্ব কালীন ও বিধবা ভাতা ভোগীদের কার্ড ও তালিকা প্রস্তত করে নিজেদের হেফাজতে রাখেন। এরপর তাদের নিকট থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের নেতা দাবি করে জোরপূর্বক টাকা নেন। না হলে কার্ড বাতিল করা হবে বলে জানান।
প্রতিবাদ সভায় জানানো হয় এলাকার অসহায় দরিদ্র লোকজনের নিকট থেকে ঘুষের টাকা নেয়া অত্যন্ত দুঃখজনক বলে নিন্দা জানানো হয়। তাছাড়া সরকারি কাজে অবৈধ ভাবে ঘুষ লেনদেনের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মাইকে জানানো হয়। খানপুরের মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জু ও আ.লীগ নেতা খলিলুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়। এদিকে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান রাঞ্জু নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন। তাব মতে, আমি একটি মহলের ষড়যন্ত্রের স্বীকার। আমার প্রতিপক্ষের লোকেরা সরকারি দলের সমর্থক হয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করছে। রাঞ্জু আরও বলেন, খানপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি মসজিদ নির্মাণ কাজের জন্য কিছু ভাতাভোগী সামান্য কিছু টাকা দান করেছেন।