× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হাওর ট্র্যাজেডি /পরিবারের ৮ সদস্যকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ ওয়াজউদ্দিন

শেষের পাতা

মজিবুর রহমান, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) থেকে
৭ আগস্ট ২০২০, শুক্রবার

পরিবারের ৮ সদস্যকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ওয়াজউদ্দিন। প্রতিবেশীরা জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ১৮ জনের মধ্যে লুবনা আক্তার (১০) ও জুলফা আক্তার (৭) নামে দুইজন হলো তার মেয়ে। লুবনা আক্তার ইতিমধ্যে পবিত্র কোরআন শরীফের ১৪ পারা মুখস্থ করেছিল। ছোট বোন জুলফা আক্তার ৩দিন আগে পবিত্র কোরআন শরীফের ছবক নিয়েছে। রীতি অনুযায়ী কোরআন শরীফের প্রথম ছবক নিলে ওস্তাদসহ প্রতিবেশিদের মিষ্টিমুখ করাতে হয়। জুলফা আক্তার পবিত্র কোরআন শরীফের ছবক নিয়েছে এই সংবাদ বাবা ওয়াজউদ্দিনকে জানিয়েছিল। মেয়ে সাফল্যের কথা শুনে ওয়াজউদ্দিন অনেক খুশি হয়েছিলেন। সুসংবাদের সাথে ওস্তাদের মিষ্টিমুখ করানোর জন্যে বাবার কাছে এক হাজার টাকাও চায় জুলফা।
ওয়াজউদ্দিনও মেয়ের আবদার রক্ষা করবেন বলে জুলফাকে জানিয়েছিলেন। হাওর ভ্রমণ শেষ করে বাড়িতে ফিরলেই মিষ্টিমুখ করানোর কাজটা সারতেন। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। দুই মেয়েসহ পরিবারের ৮ সদস্যকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ ওয়াজউদ্দিন। দাম্পত্য জীবনে দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক তিনি। পুত্র সন্তানের বয়স মাত্র ৫ মাস। দুই কন্যা ও পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। বিলাপ করে সবার স্মৃতিচারণ করছিলেন তিনি। বড় ভাই হাফেজ মৌলানা মাহফুজুর রহমান ও ভাতিজাদের সাথে দুই মেয়েকে পাঠিয়েছিলেন হাওর ভ্রমণে। হাওর ভ্রমণে ছিলেন, ওয়াজউদ্দিনের পরিবারের বড় হাফেজ মৌলানা মাহফুজুর রহমান, ভাতিজা হাফেজ জোবায়ের, হাফেজ মাহমুদ, হাফেজ মাহবুব, হাফেজ মোজাহিদ ও ভাগিনা হাফেজ রেজাউল। ময়মনসিংহের চরসিরতা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ওয়াজউদ্দিন। বুধবার সকালে নেত্রকোনার মদন উপজেলার উচিতপুর নামক এলাকায় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ৪৮ জন একসাথে হাওরে আনন্দ ভ্রমণে যান তারা। ওই সময় প্রবল বাতাস ও ঢেউয়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় লাফালাফি করে সবাই পানিতে পড়ে যান। তবে ৩০ জন সাঁতরে জীবন বাঁচালেও নিখোঁজ হন ১৮ জন। পরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন। বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হাফেজ রাকিবুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত হাফেজ মুফতি আজহারুল ইসলাম, মৌলানা আব্দুল হামিদ, মুফতি সাইদুল ইসলাম ও হাফেজ রাকিবুল ইসলামকে গ্রামের ঈদ মাঠের পাশে দাফন করা হয়েছে। একই গ্রামের ১২ জন আলেম-ওলামার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ ময়মনসিংহের চরসিরতা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। ওয়াজউদ্দিনের ভাগিনী জামাতা জানান, নিজের মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়েছে হাফেজ মৌলানা মাহফুজুর রহমানকে। আর তার দুই ছেলে, দুই ভাতিজা, দুই ভাতিজী, এক ভাগিনাসহ গ্রামের আরো ৪ জনকে ঈদ মাঠের পাশে দাফন করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর