× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সড়কে আরেকটি স্বপ্নের মৃত্যু

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৮ আগস্ট ২০২০, শনিবার

 একটি স্বপ্ন। অদম্যকে জয় করা। অধরাকে কাছ থেকে দেখা। আর সেই স্বপ্ন জয় করতেই দিনমান ব্যস্ততা। নিজেকে তৈরি করা। একের পর এক টার্গেট ঠিক করা। প্রথমে কিলিমানজারো পর্বত জয়। তারপর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বত মাউন্ট কেনিয়া অভিযান।
সব ঠিক থাকলে দু’বছর পর মাউন্ট এভারেস্ট। ২০২২ সালে পৃথিবীর শীর্ষ চূড়ায় পা রাখবেন তিনি। কিন্তু সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। সম্ভাবনাময় রত্নাকে (৩৩) কেড়ে নিলো মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন সম্ভাবনাময়ী রত্না। গতকাল সকাল পৌনে ৯টার দিকে গণভবন সংলগ্ন এলাকায় সাইক্লিং করা অবস্থায় প্রাইভেটকার পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন রত্না। তাৎক্ষণিকভাবে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ মানবজমিনকে জানান, দুর্ঘটনার সময় রত্না সাইক্লিং করছিলেন। তিনি গণভবন সংলগ্ন সড়কের পূর্বদিক থেকে পশ্চিমে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি গাড়ি পেছন থেকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আঘাত পান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘাতক গাড়ির  কোনো খোঁজ মেলেনি। ময়না তদন্ত শেষে নড়াইলে নিজ গ্রামের বাড়িতে রত্নাকে দাফন করা হয়।

পুরো নাম রেশমা নাহার রত্না। সামাজিক মাধ্যমে আর এন রত্না নামেই পরিচিত। যুক্ত ছিলেন শিক্ষকতার সঙ্গে। ধানমণ্ডির আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক ছিলেন। থাকতেন মিরপুরে সরকারি কোয়ার্টারে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির নানা কার্যক্রমের পাশাপাশি পর্বত অভিযাত্রী হিসেবেও বিভিন্ন ধরনের ট্র্যাকিং সম্পন্ন করেছেন। যুক্ত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রমে। পর্বতারোহণে তার বিপুল উৎসাহ ছিল। রত্না নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে মৌলিক ও উচ্চতর পর্বতারোহণ কোর্স সম্পন্ন করেন। দুটি ছয় হাজারি মিটার পর্বত আরোহণ করেন। দেশে ও বিদেশে বেশ ক’টি হাফ-ম্যারাথন দৌড়ানোর পর নিজেকে ফুল ম্যারাথনে দৌড়াবার জন্য প্রস্তুত করছিলেন। ধাপে ধাপে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরে পা রাখার স্বপ্ন ছিল রত্নার। সেজন্য নিয়ম করে সাইকেল নিয়ে বের হতেন। প্রতিদিনের মতো গতকালও রমনায় জগিং, হাতিরঝিল এলাকায় সাইকেল চালিয়ে মিরপুরের বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু বিজয় সরণি পার হয়ে চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় গেলে পেছন থেকে দ্রুতগামী গাড়ি তার সকল স্বপ্নকে চিরতরে মিলিয়ে দেয়। একজন মৃদুভাষী, প্রথাবিরোধী, দৃঢ়চেতা, স্বপ্নবাজ মানুষ ছিলেন রত্না। একটি সম্ভাবনাময় জীবনের অকাল পরিণতিতে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুমহল সকলের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে।  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর