× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এসপি মাসুদের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ

প্রথম পাতা

আল-আমিন
৯ আগস্ট ২০২০, রবিবার

সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ডের পর আলোচনায় আসে ওসি প্রদীপ দাশের অন্ধকার জগতের তথ্য। ক্রসফায়ার ‘বাণিজ্য’ ও মাদক ব্যবসায় মদত দেয়ার মাধ্যমে টাকা কামানোর নেশায় পরিণত হয়েছিল প্রদীপের। কিন্তু তিনি কী একাই এই কাজ করেছেন? না। তার সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনও। গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের ভাষ্যে উঠে এসেছে এসপি মাসুদের নানা অনিয়মের তথ্য। মূলত তার আশকারায় ওসি প্রদীপসহ একাধিক সদস্য বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন দিনের পর দিন। কক্সবাজারে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে দুর্নীতি, টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়া, বড় মাদক ব্যবসায়ীদের না ধরে চুনোপুঁটিদের ধরা, ক্রসফায়ার বাণিজ্য, অভিজাত হোটেল থেকে চাঁদা আদায় ও সংশ্লিষ্ট জেলার জামায়াত নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠছে, সিনহা হত্যাকাণ্ডে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের ভূমিকা নিয়েও।


ওসি প্রদীপ বা লিয়াকতের মতো কয়েকজনের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ এলেও তাদের বিরুদ্ধে বড় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি জেলা পুলিশ। অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ থাকতো কক্সবাজারের এক থানা থেকে অন্য থানায় বদলি করার মাঝেই। তাদের কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সায় ছিল এসপি’র।
এসপি’র স্ত্রী জেনিফার মুনের নামে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়া ছাড়াও নামে-বেনামে বহু সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে একটি সংস্থার প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে।

বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের দক্ষিণ ওলানিয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের আব্দুল কাদের হাওলাদার ও অজুফা খাতুনের ছেলে এবিএম মাসুদ হোসেন ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের কোনো সুযোগ হাতছাড়া করেননি। শিবিরের একজন নেতার মাধ্যমে তিনি ইসলামী ব্যাংকে চাকরি নিয়েছিলেন বলে তথ্য রয়েছে। জোট সরকারের আমলে ২৪তম বিসিএসে এএসপি হিসেবে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শ্বশুরের পরিচয়ে তিনি সুবিধা নেন বলে গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য পেয়েছে।

সূত্র জানায়, ইয়াবার নামে হয়রানি, মিথ্যা মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় নইলে ক্রসফায়ারে দেয়াসহ নানা অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে। কথিত আছে-উড়ন্ত ইয়াবা ডন হিসেবে চিহ্নিত ১০২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে কোটি টাকার বিনিময়ে আত্মসমর্পণের নামে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অন্যদিকে ক্রসফায়ারে দেয়া হয়েছে মাদক বহনকারী চুনোপুঁটিদের। এতে ইয়াবার রাজ্য কক্সবাজারে  যেমন ছিল তেমনই আছে।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারে প্রায় ৩০০টি অভিজাত হোটেল রয়েছে। এইসব হোটেল থেকে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদি কোনো হোটেল মালিক ওই টাকা দিতে রাজি না হন তাহলে ওই হোটেলে অবৈধ কারবার হয়- এমন মিথ্যা দাবি দিয়ে বন্ধের হুমকি দেয়া হয়।

ওই সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কক্সবাজার এলাকায় মাদকের যেসব ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধের শিকার হয়েছে তার অধিকাংশই খুচরা ব্যবসায়ী। যারা ইয়াবার কারবার করে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন, গড়েছেন বড় বড় রাজকীয় অট্টালিকা তারা থাকেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অপারেশন শুরু হওয়ার আগেই তাদের পুলিশের পক্ষ থেকে সংকেত দেয়া হল বলে সূত্রের দাবি।

সরকারি সংস্থার তদন্ত সূত্র বলছে, মহেশখালীর ৬৮ জন জলদস্যুর আত্মসমর্পণের ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছিলের ওসি প্রদীপ। এ ঘটনায় প্রদীপকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ থাকলেও ১৫ দিনের মাথায় প্রদীপকে টেকনাফের ওসির দায়িত্ব দেন এসপি মাসুদ।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকে গত ৩১শে জুলাই টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করেন এসআই লিয়াকত। ঘটনার পরই লিয়াকত ও ওসি প্রদীপ এসপি মাসুদের সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা বলেন। এ নিয়ে ওসি প্রদীপও কথা বলেন পুলিশ সুপারের সঙ্গে। তাদের কথোপকথনের অডিও প্রকাশ্যে আসায় এসপির ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর