× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিলেটে গ্রাইন্ডিং মেশিন কাণ্ড /সাময়িক বহিষ্কার সার্জেন্ট নাইডু

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১০ আগস্ট ২০২০, সোমবার

বন্দরবাজারে ডিউটি ছিল ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর। তিনি ডিউটি অবস্থায় চলে গেলেন চৌহাট্টায়। সেখানে যাওয়ার পর তারই পালসার মোটরসাইকেলে পাওয়া গেল বোমাসদৃশ বস্তু ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’। এ নিয়ে টানা ২০ ঘণ্টার নানা ঘটনা। সেনাদলের বোমা স্কোয়াডের সদস্যরা এসে রহস্য উদ্‌ঘাটন করেন। ঘটনার ইতি ঘটলেও ট্রাফিক সার্জেন্ট নাইডু কাহিনীর ইতি ঘটেনি। কেন তিনি চৌহাট্টা গেলেন, আর তার মোটরসাইকেলে গ্রাইন্ডিং মেশিনটি এলো কী ভাবে? এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। আর এই ফাঁকে সিলেট মহানগর পুলিশের তরফ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তি পেতে হবে নাইডুকে- এমনটি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। ঘটনা গত বুধবারের। ওইদিন রাত ৮টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় যান নগর পুলিশের ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট চয়ন নাইডু। তিনি তার ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেলটি (ঢাকা  মেট্রো ১৪-৯২৭০) চৌহাট্টার ট্রাফিক পয়েন্টে রেখে পার্শ্ববর্তী চশমার দোকানে যান। ১০ মিনিটের মধ্যেই তিনি ফিরেও আসেন। এরপর মোটরসাইকেলে উঠে যখন স্ট্যার্ট দিতে যাচ্ছিলেন এমন সময় তার পায়ে লাগে একটি বস্তু। তিনি লালচে রঙের ওই বস্তুটি দেখে মোটরসাইকেল থেকে নেমে আসেন। চৌহাট্টা পয়েন্টে থাকা সহকর্মীদেরও দেখান বস্তুটি। সবার সন্দেহ হয় বস্তুটিকে ঘিরে। এটি এলো কোথা থেকে- এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তারা। আর বস্তুটিই বা কী- এ প্রশ্ন দেখা দেয় পুলিশের মধ্যে। কেউ কেউ সেটিকে বোমাসদৃশ বস্তু বলে আখ্যায়িত করেন। এতে করে চৌহাট্টা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবরটি যায় সিলেট মহানগর পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের কাছেও। তারাও এসে বস্তুটি দেখেন। কিন্তু ট্রাফিক সার্জেন্ট নাইডু ওই বস্তুটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। তার মোটরসাইকেলে কীভাবে ওই বস্তুটি এসেছে সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি। কেউ হয়তো আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য বস্তুটি রেখে দিতে পারে- এমন ধারণা করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। এ কারণে মোটরসাইকেলটির কাছেও যাননি কেউ। বুধবার রাত থেকেই তারা মোটরসাইকেল ও ওই বস্তুটিকে ঘিরে রাখেন। র‌্যাব কর্মকর্তারাও ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। এদিকে পুলিশের মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তুটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ব্যস্ততম চৌহাট্টা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে চলে যান। রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে চৌহাট্টা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে সাহায্য চাওয়া হয় সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল টিমের। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরের পর চৌহাট্টা এলাকায় আসেন ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোম ডিসপোজাল টিম। লে. কর্নেল রাহাতের নেতৃত্বে টিমের সদস্যরা এসে ঘটনাস্থল পরখ করে মোটরসাইকেল থেকে বস্তুটিকে আলাদা করার কাজ শুরু করেন। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা বস্তুটিকে আলাদা করার পর পরীক্ষা করে জানান, এটি লোহা কাটার একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য কেউ এটি রাখতে পারে বলে ধারণা করা হয়। সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, বস্তুটি মোটরসাইকেলে এলো কীভাবে এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। সিলেট নগরে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। কেউ মোটরসাইকেলে সেটি লাগিয়ে থাকলে খুঁজে বের করা হবে। এদিকে এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু থাকার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে মোটরসাইকেলের মালিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডুকে। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া)  জ্যোতির্ময় সরকার জানিয়েছেন, ‘ঘটনা শুরুর সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর ডিউটি ছিল নগরীর বন্দরবাজারে। ওই সময় তার ওখানেই থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি চৌহাট্টা এলাকায় চলে গিয়েছেন। এবং তার মোটরসাইকেলে পাওয়া গেল বোমাসদৃশ ওই বস্তুটি।’ তিনি বলেন- ‘এ কারণে সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সার্জেন্ট চয়ন নাইডুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।’ সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘যার  মোটরসাইকেলে ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ পাওয়া  গেছে তিনি তার দায়িত্বরত এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ ছাড়া তার মোটরসাইকেলে এভাবে একটি  বোমাসদৃশ বস্তু রেখে দেয়া হলেও বিষয়টি তিনি বুঝতে পারলেন না, এসব কারণেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় তার কোনো দায়িত্ব অবহেলা তদন্তে উঠে আসলে তিনি বিভাগীয় শাস্তি ভোগ করবেন।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর