কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে মাদকের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়েছেন উপজেলার বিপুলাসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদ। সম্প্রতি একাধিকবার তার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বিপুলাসার ইউনিয়নের সাইকচাইল গ্রামে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে একই গ্রামের মৃত্যু নুরুল হকের ছেলে মো. সেলিম, আরব আলীর ছেলে সালাউদ্দিন, হেদায়েত উল্লাহর ছেলে শাহজাহান সাজু, সাদেক আলীর ছেলে রবিউল হোসেন ও মৃত্যু সামছুল হকের ছেলে সুজনদের সংঘবদ্ধ চক্র। বিপুলাসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদ তাদের যাবতীয় অপকর্মের প্রতিবাদ করায় বছর খানেক আগে তারা ইকবাল ও তার ভাই সুমনকে বেধড়ক মারধর করে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা ইকবাল মাহমুদ বাদি হয়ে ২০১৯ সালের ১৩শে আগস্ট মনোহরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সেলিম ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ। সম্প্রতি তারা জামিনে এসে মামলা নিষ্পত্তি করতে যুবলীগ নেতা ইকবালকে চাপ প্রয়োগ করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২ আগস্ট রবিবার অভিযুক্তরা পুনরায় ইকবালের উপর হামলা করে।
তারা বেধড়ক মারধর করে ইকবালের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ইকবালের ডান হাত মারাত্মক জখম হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় হামলায় ব্যবহৃত একটি দেশীয় অস্ত্র (ছোরা) উদ্ধার করেছে নাথেরপেটুয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ জাফর ইকবাল। আহত যুবলীগ নেতা ইকবাল মাহমুদ মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বিপুলাসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদের ভাই আক্তারুজ্জামান সুমন বাদি হয়ে গত ৩ আগস্ট মনোহরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগকারী আক্তারুজ্জামান সুমন বলেন, ‘তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার ভাইসহ আমরা পুরো পরিবার তাদের রোষানলে পড়েছি। তারা আমাদেরকে নিশানা বানিয়ে আমাদের উপর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। মামলা নিষ্পত্তি না করলে আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে। যার ফলে আমরা সপরিবারে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাদের রোষানল থেকে মুক্তি পেতে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি গত ২ আগস্ট বিকেলে সাইকচাইল বাজারে সাজুর দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ যুবলীগ নেতা ইকবাল দলবল নিয়ে এসে আমার উপর হামলা করে আমাকে বেদম মারধর করে। যা বাজারের অর্ধশত মানুষ স্বাক্ষী আছে। আমি বিপুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে এলাকায় সুশৃঙ্খল রাজনীতি করে আসছি। যুবলীগ সভাপতি ইকবাল মাহমুদ দীর্ঘ দিন ধরে তার দলবল নিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তারা বিভিন্ন সময় নিরীহ মানুষকে নির্যাতন করছে। আমরা যে কয়েকজন তাদের এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি, তারা আমাদের সবাইকে মাদক ব্যবসায়ী বলে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। মূলত এই অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’ অভিযুক্ত অন্যান্যদের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া যায়নি। মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’