× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লেবানন সরকারের পতন হবে আজ!

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) আগস্ট ১০, ২০২০, সোমবার, ১:২৪ পূর্বাহ্ন

বৈরুত বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনায় কাঁপছে লেবানন। সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে রাজপথ কাঁপিয়ে তুলছে মানুষ। তাদের দাবি সরকারের পদত্যাগ। প্রতিবাদকারী মানুষের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে রাজপথে। এরপর রোববার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ। একই দিনে আরো পদত্যাগের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রী আলোচনা শুরু করেন। তাদেরকে থামিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব। একজন একজন করে পদত্যাগ করার চেয়ে গণহারে মন্ত্রীদের পদত্যাগের বিষয়ে আজ সোমবার মন্ত্রীপরিষদের বৈঠক বসার কথা রয়েছে।
এর ফলে আলোচনা জোরালো হয়েছে। জল্পনা চলছে, তবে কি সরকারের সত্যি পতন হচ্ছে! যদি আজই এই পদত্যাগের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটে, তাহলে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। এতে বলা হয়, বৈরুত বন্দরে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিশাল মজুদে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬ হাজারের বেশি মানুষ। হাজার হাজার মানুষ হয়েছেন গৃহহীন। ভয়াবহ এই ট্রাজেডিতে জনরোষ তীব্র হয়ে ওঠে। এমনিতেই কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অমনোযোগিতার কারণে ক্ষুব্ধ জনগণ। তার ওপর ওই বিস্ফোরণ তাদেরকে আরও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এর প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী সপ্তাহান্তে পদত্যাগের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ তো পদত্যাগের ঘোষণাই দিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, লেবাননের জনগণকে তাদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতার জন্য আমি ক্ষমা চাই। পরিবর্তন অধরাই রয়ে গেছে। প্রত্যাশার সঙ্গে যখন বাস্তবতা মেলে না, বৈরুত বিস্ফোরণের ভয়াবহতার পর আমি তাই সরকার থেকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি।

ওদিকে পরিবেশমন্ত্রী ডামিয়ানোস কাত্তার প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবকে রোববারের মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে বলেছেন, বৈরুত বিস্ফোরণে আমার বাচ্চার বন্ধুরা মারা গেছে। মন্ত্রণালয়ে বসে এই দায় আমি বহন করতে পারছি না। ওদিকে মন্ত্রীপরিষদের সূত্রগুলো আরব নিউজকে বলেছেন, রোববার যেসব মন্ত্রী পদত্যাগ করার আগ্রহ দেখিয়েছেন তাদেরকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী দিয়াব। আজ সেখানে বসার কথা মন্ত্রীপরিষদের বৈঠক। সেখানে গণহারে পদত্যাগের বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

পার্লামেন্টের স্পিকার নাবি বেরি রোববার ঘোষণা করেছেন, যে অপরাধ রাজধানী এবং জনগণকে দুর্দশায় ফেলেছে তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য পার্লামেন্টের একটি অধিবেশন বসবে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ফিউচার পার্লামেন্টারি ব্লকের সদস্য ড. আসেম আরাজি বলেছেন, বর্তমান সরকারের পতন ঘটলে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই প্রেসিডেন্টের কাছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেয়া নিয়ে পার্লামেন্টারি আলোচনা আহ্বান করার ক্ষেত্রে তার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তিনি আরো বলেন, আগের সরকারের সময়ও এই একই ঘটনা ঘটেছে। এতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দৃশ্যত এমন পার্লামেন্টারি আলোচনা দ্রুতই বসবে। কারণ, আমরা বিশাল এক সমস্যার মুখোমুখি। অবহেলা থেকে একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এটা মানবতার জন্য বিশাল এক ট্রাজেডি। এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক তদন্ত।

ওদিকে বৈরুত বিস্ফোরণের তথ্য উদঘাটনের জন্য তদন্তদলকে ৬ দিনের সময় বেঁধে নিয়েছে রাষ্ট্র। কিন্তু স্থানীয় এই তদন্তের ওপর আস্থা নেই লেবাননিদের। তারা আন্তর্জাতিক তদন্ত আহ্বান করেছেন। শনিবার এই দাবিতে কাতায়েব পার্টির তিনজন এমপি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করেছেন প্রগ্রেসিভ সোশ্যালিস্ট পার্টির এমপি মারওয়ান হামাদে। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ম্যারোনাইট প্যাট্রিআর্চারের প্রধান কার্যালয় থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন এমপি নিমাত ফ্রেম। লেবানিজ ফোর্সেস পার্টির প্রধান সমির জিয়াজিয়া বলেছেন, তারা পদত্যাগে আগ্রহীদের একত্রিত করার চেষ্টা করছেন, যাতে যত দ্রুত সম্ভব পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। এমপি সেথ্রিদা জিয়াজিয়া বলেছেন, লেবানিজ ফোর্সেস দলের ১৫ জন এমপির পদত্যাগপত্র আমাদের পকেটে। যখনই দেখবো নৃশংস এই কর্তৃত্বের বিদায়ের সময় হয়েছে তখনই আমরা তা পেশ করবো।

ওদিকে ম্যারোনাইট প্যাট্রিআর্চ বেচারা আল রাহি বিস্ফোরণের পর তার প্রথম ধর্মোপদেশে ওই বিস্ফোরণকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিস্ফোরণের মূল তথ্য উদঘাটনের জন্য তিনি এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক তদন্ত আহ্বান করেছেন। বলেছেন, এই গণহত্যা, বিপর্যয়ের জন্য দায়ী প্রতিজনের বিরুদ্ধে বাধ্যতামুলকভাবে বিচার করতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক তদন্তের যেকোনো আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রেসিডেন্ট মিশেল আওন। তিনি উল্টো স্থানীয় তদন্তের ওপর আস্থা রেখেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর