× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২৬ দিনে ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার

প্রথম পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১১ আগস্ট ২০২০, মঙ্গলবার

অর্থবছরের প্রথম মাসের (জুলাই) প্রথম ২৬ দিনে ব্যাংক থেকে নিট ৬ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। একই সময়ে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের নেয়া ঋণ বাবদ পরিশোধ করেছে ২ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক খাত থেকে ঋণ করে সরকার। গত বছর ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা এবং চলতি বছর থেকে শুরু হয় করোনার মহামারি। ফলে লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। অন্যদিকে, নানা শর্তে সঞ্চয়পত্রেও বিনিয়োগ কমেছে। সব মিলিয়ে বাজেটের বাড়তি ব্যয় মেটাতে অতিমাত্রায় ব্যাংক ঋণনির্ভরতায় ঝুঁকে পড়েছে সরকার।
অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা জানান, সরকারের ঋণনির্ভরতা কমানো উচিত। কারণ এতে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রতিবছরই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় সরকার। তবে গত অর্থবছর থেকে এর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেই চলেছে। এ জন্য সমাপ্ত অর্থবছরে সরকারি ঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সরকার পৌঁছে যায় সেই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি। তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। ঋণের এই অঙ্ক আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১০৯ শতাংশ বেশি।
সূত্র জানায়, রাজস্ব আদায়ে নাজুক অবস্থা এবং সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের শুরু থেকেই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের বেশি ঋণ নেয়ার প্রবণতা ছিল। তার মধ্যে অর্থবছরের শেষ দিকে এসে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতির সব হিসাব এলোমেলো হয়ে যাওয়ায় সেই ঋণনির্ভরতা আরো বেড়েছে। নতুন অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ৪৪.৪ শতাংশ সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৪২১ কোটি টাকা করা হয়। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
২৯শে জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতির এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯.৩ শতাংশ, যার মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৪৪.৪ শতাংশ ও ১৪.৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুন শেষে বেসরকারি খাতে বার্ষিক ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১১.৩২ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুনে সেই প্রবৃদ্ধি আরো নেমে এসেছে ৮.৬১ শতাংশে। এটি চলতি মুদ্রানীতিতে প্রক্ষেপিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬.১৯ শতাংশ কম। এটি এযাবৎকালের সর্বনিম্ন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এটি ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা কম।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। ঠিক মতো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। এ ছাড়া নানা শর্তের কারণে সঞ্চয়পত্রের বিক্রিও কমেছে। এসব কারণে ব্যয় মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। সরকারের ব্যাংক ঋণনির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের উচিত অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশি উৎস থেকে কম সুদে ঋণ আনার ওপর বেশি জোর দেয়া।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর