× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বন্যায় বিপর্যস্ত গোয়াইনঘাটের ফসলের মাঠ

বাংলারজমিন

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি
১১ আগস্ট ২০২০, মঙ্গলবার

চার দিকে ছিলো পানি আর পানি। অথৈ জলের সাথেই ঘরবন্ধি অবস্থায়ই ছিলো সবার বসবাস। সামনে পিছনে কিংবা নিচে সর্বত্রই পানি। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যাওয়ার ফুসরত ছিলনা নৌকা। গ্রামীণ প্রতিটি রাস্তাই পানির নিচে নিমজ্জিত ছিলো দীর্ঘদিন। পানিতে নিমজ্জিত সবকটি ফসলের মাঠ। সিলেটের গোয়াইনঘাটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়িঢলে ২ মাসে ৪ দফা সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার কৃষি ব্যবস্থাকে দুমড়ে মুছড়ে ক্ষতবিক্ষত করে গেছে। সর্বনাশা বানের জলে নিমজ্জিত কৃষকের রোপায়িত ফসলের মারাত্মক ক্ষতিসাধান করে যায়।
সর্বনাশী এমন করালগ্রাসী বন্যা চোখে পড়েনি ৫০ বছরেও। পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট এ বন্যায় ভেসে গেছে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায়সব কৃষকের স্বপ্নও। বন্যার কারণে গোয়াইনঘাটের আউশের রোপায়িত ফসলের ব্যাপক ক্ষতিই এবারের আউশ উৎপাদনের লক্ষমাত্রার পথকেও কে ব্যাহত করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাটে এবার আউশ ৭ হাজার ১ শত ২৯ হেক্টর ধান রোপন করা হয়। তার মধ্যে প্রায় ১২’শ হেক্টরই বন্যার পানিতে বিনষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার ফতেহপুর, নন্দিরগাও ও আলীরগাওয়ের কৃষকরাই বেশি আউশ ফলিয়েছিলেন। ফতেহপুরের কৃষকরা উচু এলাকায় জমির অবস্থান হয়ায় কোন রখম বন্যার পানির তোড় থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ১২’শ হেক্টর আউশের ক্ষতি হলেও  অবশিষ্ট জমির ফসল রক্ষা সম্ভব হয়েছে। সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আউশের ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের মাঠে প্রান্তিক কৃষকরা জড়ি, লাইনজড়, বাধাইল, বিরইনসহ অন্যান্য দেশি জাতের ধানের বীজ বাইন (ছিটিয়ে) দিচ্ছে। বন্যায় আমনের ১৫ হেক্টরের মতো বীজতলাও নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে বন্যায় আউশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিস নতুন করে ১৫ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে রোপা ও বোনা আমন রোপনের লক্ষ মাত্রা নির্দারণ করেছে। উপজেলার কৃষকদের বন্যাক্রান্ত জমিতে উন্নত জাতের রোপাআমন রোপনে কৃষকদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সরকারি বরাদ্ধে আপদকালিন সময়ে কৃষকের প্রয়োজনার্থে ২০ মিটার দুরত্বে ১ বিঘা ভাসমান বীজতলা করে কৃষকদের বীজ সহায়তা দিয়ে পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সুলতান আলী জানান, এবারের বন্যায় সর্ব সাকুল্যে গোয়াইনঘাটের ৩ হাজার ৯শত হেক্টর  আউশ, বোনা আমন, সবজিতলা ও ৩০ হেক্টর বীজতলা সম্পূর্ণরুপে নিমজ্জিত হয়েছিলো। বন্যা সৃষ্ট দুর্যোগে আউশের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এবং উপজেলার বিভিন্নস্থানে নতুন করে ১৫ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে রোপাআমন চাষাবাদের লক্ষ মাত্রা নির্দারণ করা হয়েছে। উপজেলার কৃষকদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া জমিতে নতুন করে উন্নত জাতের রোপাআমন ধান রোপনে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যদি ধান রোপন সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে মাশকলাই বা সবজি আবাদ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তরফে সরকারি বরাদ্ধে আপদকালিন বীজতলা ও ভাসমান বীজতলা তৈরী করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের যে কোন পরামর্শ ও সহযোগিতায় উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের দোরগোড়ায় রয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, দফায় দফায় পাহাড়ীঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে কৃষি, মৎস্য ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেছে। বিশেষ করে কৃষকদের আউশ ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আউশের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সব ধরণের সরকারি সহযোগিতাদানে একাধিক উদ্যোগ আছে। 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর