× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আত্রাইয়ে দুই বছর ঘরবন্দি একটি পরিবার

বাংলারজমিন

আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি
১২ আগস্ট ২০২০, বুধবার

 তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়নের সমসপাড়া গ্রামে একটি পরিবারকে দুইবছর ধরে একঘরে করে রেখেছেন গ্রামের প্রধানরা। ফলে অমানবিক জীবন-যাপন করছে ওই পরিবারটি। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছে ভুক্ত ভোগী আব্দুস সাত্তার। আব্দুস সাত্তার বলেন, দুইবছর পূর্বে তার মেয়ে প্রেমের সম্পর্ক করে সামাজিকভাবে স্থানীয় চেয়ারম্যান, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের  উপস্থিতিতে বিবাহ  হয়। বিয়ের পর তারা সুখে-শান্তিতে ঘর সংসার করে আসছে। পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিয়ে এলাকার গ্রাম প্রধান মো. এরশাদ আলী, মো. জাহিদুল ইসলাম, আনিছার রহমান (ভোলা), শাহিন, মন্টু ও রফিক গ্রাম্য শালিস ডেকে ভুক্তভোগী  মো. আব্দুস সাত্তার ও তার পরিবারকে একঘরে করে রাখে। আব্দুস সাত্তার দাবি করে বলেন, তার তিন মেয়ে ও  মেয়ে জামাই সহ আত্মীয়স্বজনরা তার বাড়িতে আসতে পারছেন না। এমন কি বিগত দুইবছর ধরে গ্রামের কোনোরূপ অনুষ্ঠান, বিবাহ, মৃত্যুর অনুষ্ঠানে তাকে এবং তার পরিবারকে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয় না।
ফলে অমানবিক জীবন-যাপন করছে। এবং গত দুইবছর মুসলিম ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তাকে  অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয় না। এ বছর  কোরবানি গ্রামের অন্য মানুষের সঙ্গে ভাগ  দিতে টাকা প্রদান করা হলে সে টাকা ফেরত  দেয়া হয়। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে তিনি গ্রামের অন্যান্য পরিবারের সহিত যোগাযোগ করলে তাদেরকেও বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়। গ্রামপ্রধানরা আগের একটি মুচলেকাকে পুঁজি করে ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন ওই গ্রামপ্রধানরা। এ অবস্থায় ৫ সদস্যবিশিষ্ট পরিবারে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করায় দুশ্চিন্তায় তার শরীরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগে ধরেছে। এ বিষয়ে গ্রামপ্রধান মো. এরশাদ আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আপনারা গ্রামে আসুন বৈঠকের মাধ্যমে সব কিছু জানানো হবে, তবে আমি এককভাবে আপনাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো কথা জানাতে বা বলতে রাজি নয়। অপরদিকে গ্রাম প্রধান জাহিদুলের সঙ্গে কথা বললে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হন নাই।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মোল্লা জানান, এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে বিষযটি মৌখিকভাবে জানান, পরবর্তীতে আমি ওই সব গ্রাম প্রধানকে আমার ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিষয়টি অবহিত করি এবং আব্দুস সাত্তারকে এক ঘরে থেকে অব্যাহতি দিয়ে সকলে গ্রামে একসঙ্গে বসবাস করে চলাফেরা করার জন্য নির্দেশ দেই। কিন্তু গ্রামপ্রধানরা এখনো পর্যন্ত আমার কথা রাখে নাই। আইনের কোনো বিধান নাই যে, কাউকে যে কোনো বিষয়ে গ্রামপ্রধানরা একঘরে করে রাখেন।  গ্রামের কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধ বা অন্যায় করে থাকলে তার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, থানা পুলিশ আছে সে খানে অভিযোগ করা উচিত। কেউ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তার জন্য সে ব্যক্তিই নিজেই দায়ী হবেন। আব্দুস সাত্তারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে এ বিষয় আমার জানা নাই। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার ঊর্ধ্বতন মহল ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর