× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নবপ্রজন্মের নবচিন্তা

ষোলো আনা

ইভান চৌধুরী, বেরোবি থেকে
১৪ আগস্ট ২০২০, শুক্রবার

সেশনজট, ক্লাসরুম সংকট, ল্যাব সংকট, শিক্ষক সংকট, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, দীর্ঘদিন থেকে অবকাঠামোগত অনুন্নয়ন, পরিবহন সংকট নিয়ে পত্র-পত্রিকায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সব সময় আলোচিত-সমালোচিত একটি নাম। নিয়োগ শর্তের কোনো তোয়াক্কা না করে ক্যাম্পাসে লাগাতার ভিসির অনুপস্থিতি, আইন লঙ্ঘন করে একাধিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ, ভিসি’র হাজিরা খাতা স্থাপন, গভীর রাতে ভিসি কর্তৃক ক্লাস নেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ক্যাম্পাসে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ’ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে মনগড়া উদ্ভট বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হলেও সাংবাদিকরা কেউ কেন্দ্রীয় অফিসে সংবাদ পাঠায়নি। তারা বিবৃতিতে চারজন সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করে বলেন, এরা সব সংবাদ কেন্দ্রীয় অফিসকে অবহিত করে না এবং এদের কাছ থেকে কোনো গঠনমূলক রিপোর্ট পাওয়া যায় না। বরং এরা এই দায়িত্বের অপব্যবহার করছে। এজন্য শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির জন্য পত্রিকা অফিস এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নবপ্রজন্মের এই বিবৃতির পরপরই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া এক কর্মচারী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে সংবাদমাধ্যম, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘পতিতা, চাটুকার, কীট, কুলাঙ্গার, হকার’ লিখে বিকৃত ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন।

নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের সব শিক্ষকের  ক্যাম্পাসে আসার এক থেকে দেড় বছর হয়েছে মাত্র। অপরদিকে করোনাকালীন সময়ে নিয়োগ পাওয়া তৃতীয় শ্রেণির র্কমচারী খোরশেদ নিয়োগের পর এখনো ক্যাম্পাসেই আসেনি।  যেখোনে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী সাংবাদকিরা সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

‘নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ’র এই বিবৃতি এবং তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর এমন বিকৃত মানসিকতার পর থেকেই ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থী-সাংবাদিকরা, চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়। এ রকম ভাষাগত অসদাচরণ এবং অনৈতিক বিবৃতি প্রদানের জন্য নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ারও দাবি করেছেন অনেকে।
অপরদিকে সেই কর্মচারী খোরশেদের স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানিয়ে তার (খোরশেদের) কুশপুত্তলিকাদাহ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি যতক্ষণ খোরশেদের স্থায়ী বরখাস্ত হবে, আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা।

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পতিতা, হকার বেরোবি ভিসিকে অবগত করেই বলেছেন বলে জানান সেই কর্মচারী খোরশেদ। তিনি বলেন- আমি যা কিছু করেছি (ফেসবুক স্ট্যাটাসে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের আপত্তিকর মন্তব্য) অফিসিয়াল প্রসিডিউর মেইনটেইন করেই করেছি। কোনো ধরনের অফিসিয়াল প্রসিডিউর তিনি পালন করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে খোরশেদ জানান, আমার কলাম, নিউজ লেখালেখি সবকিছু সম্পর্কে ভাইস চ্যান্সেলর স্যার অবগত। আমি তাকে জানিয়ে সবকিছু করেছি। খোরশেদের এই অডিও বক্তব্যটি সমালোচনার ঝড় তোলে। এ ব্যাপারে ভিসি নাজমুল আহসানের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। খোরশেদের বক্তব্য নিয়ে যখন ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাসের বাইরে এত সমালোচনা ঠিক তখনি ভিসির খোরশেদের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরো বেড়ে যায়।  শিক্ষার্থীদের পতিতা, হকারসহ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের পরেও সেই কর্মচারীর বাড়িতে খেতে যাওয়া নিয়ে এসেছে নানান প্রশ্ন।

বেরোবি’র শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন নবপ্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের বিবৃতি ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী খোরশেদের এমন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠন বেরোবিসাস, শিক্ষকদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০টির বেশি সাংবাদিক সংগঠনসহ বেরোবি ক্যাম্পাস ও সার দেশের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর