× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কামরানের স্মৃতি ধরে রাখলেন ছেলে শিপলু

দেশ বিদেশ

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৫ আগস্ট ২০২০, শনিবার

 ১৫ই আগস্ট এলেই নিজের নিজের কিছু কর্মসূচি থাকতো সিলেটের প্রয়াত সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের। নিজ উদ্যোগেই পালন করতেন তিনি এ কর্মসূচি। কখনো কখনো কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করতেন দলীয় নেতাকর্মীদের। সঙ্গে থাকতেন পরিবারের সদস্যরাও। গতবার সাবেক মেয়র কামরান সিলেটে আয়োজন করেছিলেন কাঙালি ভোজের। এর আগেও প্রতিবছর তিনি একইভাবে আয়োজন করে যেতেন। মেয়র থাকাকালেও তার এই আয়োজনে কখনো ভাটা পড়েনি। বরং আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কাঙালি ভোজের আয়োজন করেছেন।
এবার সিলেটের সাবেক এই মেয়র বেঁচে নেই। গত ১৫ই জুন মহামারি করোনায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। সিলেটে কামরান ছাড়াই পালন করা হচ্ছে ১৫ই আগস্টের কর্মসূচি। কিন্তু পরিবার বসে নেই। বড় ছেড়ে ডা. আরমান আহমদ শিপলু পিতার অনেক দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। ১৫ই আগস্ট কয়েক দিন আগে থেকেই তিনি পিতার স্মৃতি ধরে রাখতে কর্মসূচি হাতে নেয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। কথাও বলেছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেও। কিন্তু এবার যেহেতু করোনাকাল। সবকিছুই করতে হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব মেনে। এ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পিতা কামরানের মতো কাঙালি ভোজের আয়োজন করতে পারেননি। তবে- তার পরিবারের পক্ষ থেকে কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি অনুযায়ী ১৫ই আগস্টকে সামনে রেখে গতকাল শুক্রবার সিলেটের কয়েকটি মাদ্রাসায় খাদ্যসামগ্রী নিজে গিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন ডা. শিপলু। সকালে প্রথমে ডা. শিপলু তার নিজ এলাকা ছড়ারপাড়ের মাদ্রাসায় খাদ্যসামগ্রী দেন। বিকালে তিনি নগরীর কাজীরবাজারে জামেয়া মাদানীয়া মাদ্রাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন। এ সময় তার সঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানও উপস্থিত ছিলেন। কামরানের বড় ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু জানিয়েছেন- ‘১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী পালনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতেন। বিরোধী দলে থাকার সময়ও তিনি ১৫ই আগস্ট পালন করেছেন। সিলেট আওয়ামী লীগের প্রায় সব অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকতেন। এর বাইরে নিজের পরিবারের পক্ষ থেকেও কাঙালি ভোজের আয়োজন করতেন।’ তিনি জানান- ‘এবার তার বাবা নেই। এ কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে কাঙালি ভোজের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য বিধির কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। এ কারণে কয়েকটি মাদ্রাসায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। মাদ্রাসার এতিমখানার শিশুরা এসব খাবার খাবেন।’ দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি কামরানের সামাজিকতা ছিল সিলেটে অনন্য উদাহরণ। সিলেটের রাজনৈতিক, ধর্মীয় সম্প্রীতিতে তিনি ছিলেন অগ্রনায়ক। সামাজিকভাবে সিলেটের মানুষের সঙ্গে দল মতের ঊর্ধ্বে থেকে কামরান সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এ কারণে রাজনীতির বাইরে সামাজিকতা নিয়ে কামরান সব সময় ব্যস্ত থাকতেন। কামরানের মৃত্যুর পর পিতার সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়েছেন ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু। পিতার মৃত্যুর পর তিনি নিয়ম অনুযায়ী চেহলাম পালন করতে পারেনি। ঘরোয়া পরিবেশে পালন করা হলেও প্রায় ১৫ হাজার পরিবারের বাসায় তিনি শিরনি পৌঁছে দিয়েছেন। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই কামরানের বাসায় বিপুলসংখ্যক লোকজন উপস্থিত হতেন। এর কারণ- কামরানের পক্ষ থেকে পশু কোরবানি দেয়া হতো। আর সেই কোরবানির পশুর মাংস পৌঁছে দেয়া হতো বাড়ি বাড়ি। ছড়ারপাড়ের মানুষের ঘরে ঘরে মাংস পৌঁছে দেয়া ছাড়াও নগরের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী মানুষদের বাসায়ও পৌঁছানো হতো কোরবানির মাংস। এবার কামরানের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন শিপলু। পিতার মতো না পারলেও তিনি কোরবানি দেয়া এবং মাংস পৌঁছে দেয়ার কাজ করেছেন। কামরান পরিবারের ঘনিষ্ঠজন ও যুবলীগ নেতা মেহেদী কাবুল জানিয়েছেন- সিলেটের একটি মাত্র ড্রয়িং রুম সবার জন্য খোলা ছিল। কামরানের মৃত্যুর পরও সেই ড্রয়িংরুম বন্ধ হয়নি। নানা কাজে আসা মানুষদের পরিবারের পক্ষ থেকে বড় ছেলে ডা. শিপলু সাক্ষাৎ করেন। তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর