× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লাহোরে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে পাকিস্তান, ধর্ষণকারীদের শনাক্ত

দেশ বিদেশ

মানবজমিন ডেস্ক
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, সোমবার

লাহোরে সন্তানের সামনে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে পাকিস্তান। লাহোর, ইসলামাবাদ ও দেশের অন্যান্য স্থানে হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার আহ্বান জোরালো হয়েছে। এ ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে সন্দেহজনকভাবে একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম আবিদ আলী (২৭)। তার বাড়ি লাহোর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ভাওয়ালনগরের ফোর্স আব্বাসে। শনিবার এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট শাহবাজ গিল। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে লাহোরের একটি মহাসড়কে তিন সন্তানের সামনে গণধর্ষিত হন ওই নারী।
গুজ্জারপুরা এলাকায় তার গাড়িতে ত্রুটি দেখা দেয়ায় বা জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় তিনি সেখানে আটকা পড়েন।
এ সময় ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়। মেডিকেল রিপোর্টেও ধর্ষণের আলামত নিশ্চিত হওয়া গেছে। শাহবাজ গিল শনিবার এক টুইটে বলেছেন, সন্দেজভাজন একজনের ডিএনএ মিলাতে পারার জন্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী, আইজিপিকে অভিনন্দন। শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি-নিউজ।
এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে পাকিস্তানের মানুষ। ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো প্রকাশ্যে অপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের দাবি জোরালো করেছে। পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে সন্দেহভাজন আবিদ আলীর কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আবিদ আলীর ডিএনএ মিলে গেছে। তাকে ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে টিম পাঠানো হয়েছে। এর আগে ২০১৩ সালেও একজন নারী ও তার মেয়েকে তার আবাসিক এলাকায় গণধর্ষণে জড়িত ছিল আবিদ আলী। তার জেল হয়। কিন্তু ধর্ষকদের চাপের মুখে ধর্ষিতার পরিবার তাকে ক্ষমা করে দেয়। ফলে জেল থেকে বেরিয়ে আসে সে। পুলিশ বলেছে, এবার ধর্ষণে জড়িত আলীর সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে শেখুপুরা জেলার ওয়াকারুল হাসানকে।
উল্লেখ্য, বুধবার ধর্ষিতা সম্প্রতি ফ্রান্স থেকে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তান ফিরেছেন। তার স্বামী প্যারিসে থাকেন। তিনি পুলিশের কাছে বিবৃতিতে বলেছেন, নরপিশাচরা আমাকে ও তিন সন্তানকে পাশের বাসের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে সন্তানদের সামনে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। তারা আমার পার্স ছিনিয়ে নেয়। তাতে এক লাখ রুপি ক্যাশ ছিল। একটি ব্রেসলেট ছিল। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন কার্ড ছিল। আর ছিল তিনটি এটিএম কার্ড।
এ ঘটনায় ধর্ষণকারীদের দায়ী না করে ধর্ষিতাকে দায়ী করার জন্য লাহোরে নবনিযুক্ত পুলিশ প্রধান উমর শেখকে চাকরি থেকে সরিয়ে দিতে তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়েছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ সরকারের ওপর। উমর শেখ বলেছেন, ওই নারীর অতো রাতে সন্তানদের নিয়ে বাইরে বের হওয়া ঠিক হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের বিরোধী দল পিএমএল-এন। তারা বলেছে, অপরাধীদের ধরে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। এটা এখন পাকিস্তানের মর্যাদার প্রশ্ন। পিএমএল-এন নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এই হায়েনাদের দোষী সাব্যস্ত করা না হবে, অমানবিক অপরাধীদের ধরে শাস্তি দেয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পুরো ব্যবস্থায় দায়ী থাকবে। উল্লেখ্য, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে নওয়াজ শরীফের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে। তাকে এ সপ্তাহে পাকিস্তানের একটি জবাবদিহিতামূলক আদালত পলাতক ঘোষণা করেছে।
ধর্ষকদের প্রকাশ্যে চাবুক মারার দাবি জানিয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ কায়েদ-এর প্রেসিডেন্ট চৌধুরী সুজ্জাত হোসেন। অল পাকিস্তান উইমেন এসোসিয়েশনের দুররে শাওয়ার বলেছেন, প্রকাশ্য স্থানে সব সময়ই নারীরা অনিরাপদ। অন্যদের সঙ্গে সিঙ্গেল মা বা সিঙ্গেল নারীকে অবশ্যই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। লাহোর এবং ইসলামাবাদের মধ্যে চলাচল করেন, এক শহর থেকে অন্য শহরে এমন অনেক সিঙ্গেল নারী আছেন। অধিকারকর্মী ফারুক তারিক বলেছেন, এই গণধর্ষণ হলো পুলিশ ও সরকারের মুখের ওপর চপেটাঘাত। এসব খাতে প্রশাসনিক অনেক ত্রুটি রয়েছে। সংখ্যালঘু অধিকারকর্মী পিটার জ্যাকব বলেছেন, এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু এতে সবাই অনিরাপদ অনুভব করছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর