× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খুলনা বিভাগের ৯৬৫ স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার

করোনাকালীন সময়ে সম্মুখযোদ্ধা হয়ে কাজ করছেন ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারা আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। তারপরও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন কোভিড-১৯ পজেটিভ ব্যক্তিদের। করোনা মহামারিতে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক, নার্সসহ ৯শ’ ৬৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তাছাড়াও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ জন। এদিকে সুরক্ষা সরঞ্জামের প্রতি বিশেষ নজর দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন খুলনার নেতৃবৃন্দ।
খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খুলনায় ১৬১, যশোরে ১৮২, ঝিনাইদহে ৮১, নড়াইলে ৮৮, কুষ্টিয়ায় ১০৫, চুয়াডাঙ্গায় ৬৩, মাগুরায় ৬৫, সাতক্ষীরায় ৮৮, মেহেরপুরে ৩৫ ও বাগেরহাটে ৯৭ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে খুলনা ও যশোর জেলায় স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
খুলনায় ১৬১ জনের মধ্যে ৩৭ জন কর্তব্যরত চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হন। বাকি ১২৪ জন ছিলেন নার্সসহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই আক্রান্ত হন ৩৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
খুমেক হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (এনেস্থেশিয়া বিভাগ) ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার খুলনায় প্রথম আক্রান্ত হন করোনায়। করোনা রোগীর চিকিৎসা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুলনার বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্মকর্তাসহ নার্সিং স্টাফ ও কর্মচারীদের করোনা প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন তিনি। গত ২২শে আগস্ট করোনা পজেটিভ হয় ডা. সুহাস রঞ্জন হালদারের।
এ বিষয়ে তিনি (ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার) জানান, ‘রোগীর চিকিৎসা দিতে দিতে কখন যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছি বুঝতে পারিনি। শারীরিকভাবে একটু ভারী হওয়ার কারণেই তাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন সকলেই। তারপরও শক্ত মনোবল ও সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মানার কারণে ১০-১২ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। করোনা পজেটিভ থাকাকালীন সময়ে তিনি ফোন কলের মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া অব্যাহত রেখেছিলেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (ডিজিজ কন্ট্রোল) সাদিয়া মনোয়ারা উষা। তিনি জানান, করোনা কোনো আতঙ্কের বিষয় নয়। জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গলাব্যথাসহ করোনার সব উপসর্গ নিয়ে ১৪ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। করোনা পজেটিভ হয়েও টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছেন তিনি।   
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও বিএমএ খুলনার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মেহেদি নেওয়াজ জানান, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা হিসাবে কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ পরিস্থিতির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা দিতে গিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। খুলনায় ৫/৬ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। প্রথমদিকে সুরক্ষা ব্যবস্থা নাজুক থাকার কারণে চিকিৎসক, নার্স বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের হার বেশি ছিল। বর্তমানে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব না থাকলেও রয়েছে এন-৯৫ মাস্কের অভাব। যারা করোনা রোগীর সংস্পর্শে যান, তাদের এন-৯৫ মাস্কের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সরবরাহ এখন পর্যাপ্ত নেই। চিকিৎসক বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান এ চিকিৎসক নেতা।
তিনি আরো বলেন, দেশে প্রায় ৭০ শতাংশ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। সরকার যেসব সুযোগ-সুবিধা স্বাস্থ্যকর্মীদের দিচ্ছে তা শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানই পাচ্ছে। কিন্তু দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা তা পাচ্ছেন না। তাই স্বাস্থ্যকর্মীদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা। ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে কর্মস্থলে যোগদেন তিনি। ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রত্যক্ষভাবে করোনা রোগীর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে স্বাস্থ্যকর্মীরা সরকারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর