× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

যমুনায় বাড়ছে পানি, ভাঙন

বাংলারজমিন

গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ থেকে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি চতুর্থ বারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একদিকে নিম্নাঞ্চল যেমন প্লাবিত হচ্ছে অন্যদিকে দেখা দিয়েছে ব্যাপক নদী ভাঙন। বিশেষ করে এনায়েতপুর থানার দক্ষিণাঞ্চলে আবারো শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। যমুনায় পানি আবার বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দু’দিনে দক্ষিণের প্রায় অর্ধশত বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আক্ষেপ, নদীতে সব বিলীনের পর বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকা সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকার প্রকল্প দিয়ে কি লাভ হবে ? পাউবো ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়, এ বছর যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সময় এবং আগে-পড়ে দফায় দফায় ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যায় এনায়েতপুর থানার দক্ষিণাঞ্চলের শতাধিক ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। একই চিত্র ছিল যমুনার পূর্বপাড় চৌহালীর খাষপুখুরিয়া থেকে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই গ্রাম পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। গত মঙ্গলবার থেকে শিক্ষা, চিকিৎসা ও তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ জনপদ এনায়েতপুর থানাধীন আড়কান্দি, বাঐখোলা-ঘাটাবাড়ি ও পাকুরতলা এলাকায় নতুন করে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন।
চারদিনের ব্যবধানে ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় অর্ধশত বসতভিটা, কয়েশ’ একর আবাদি জমি। এ থেকে রেহাই পাচ্ছে না পাকুরতলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদ। একদিকে অব্যাহত ভাঙন অপর দিকে এই মুহূর্তে ভাঙন ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে চৌহালী উপজেলাধীন দেশের সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাপসাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সি ইনস্টিটিউড, স্কুল এন্ড কলেজ, বহু তাঁত কারখানা সহ হাটবাজার যমুনার অদুরে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষায় স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজের কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পাকুরতলা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল আজিজ, সোবহান, খলিল, মোসলেম উদ্দিন জানান, শুধুমাত্র সঠিক পরিকল্পনা আর জনপ্রতিনিধিদের তদারকির অভাবে এ এলাকার মানুষ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে আমাদের বসতভিটা সহ বেশ কিছু ঘরবাড়ি মুহূর্তের মধ্যে চোখের সামনে নদীতে বিলীন হয়েছে। আর কতো বছর অপেক্ষা করলে এখানে তীর রক্ষা বাঁধ হবে? স্থানীয় সাংবাদিক রফিক মোল্লা জানান, পানি বৃদ্ধির সময় ভাঙন ঠেকাতে জরুরি কিছু কাজ করা হলেও স্থায়ী কাজের অভাবে এখন হুমকির মুখে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা। দ্রুত কাজ করা না হলে অস্তিত্ব বিলীন হবে বৃহত্তম একটি জনপদের। এ বিষয়ে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এড. আনোয়ার হোসেন জানান, যমুনার ভাঙনরোধে টেকসই স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে এক দিকে যেমন নদী শাসন হবে সেই সঙ্গে রক্ষা পাবে নদী পাড়ের মানুষ। শিল্পসমৃদ্ধ এনায়েতপুর থানাকে রক্ষায় দ্রুত তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাই। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, ভাঙনের বিষয়ে উর্ধ্বতন মহল অবগত। এছাড়া এনায়েতপুরের সাড়ে ৬ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণে প্রায় সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর