বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় আমন ধান ক্ষেতে ব্যাপকহারে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকা দমনে ব্যর্থ হওয়ায় কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। পোকা দমন বা নিধনে উপজেলা কৃষি অফিসের কোনো প্রকার সহায়তা পাচ্ছেন না বলে কৃষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে । সরজমিন বৃহস্পতিবার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা, সান্দিড়া, কাশিমিলা, প্রসাদখালীসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব জমির আমন ধানের গাছে ব্যাপক হারে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকার আক্রমণের কারণে অধিকাংশ ধান গাছের পাতা মরে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। কোনো কোনো জমির ধান গাছ প্রায় পাতা শূণ্য হয়ে মরে যাচ্ছে। মাজরা দমনে কৃষকরা বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রকার সুফল পাচ্ছেন না। উপজেলার দমদমা গ্রামের কৃষক গোলাম আম্বিয়া বলেন, এ বছর তিনি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে সুগন্ধী ও স্বর্ণা-৫ জাতের আমন ধান চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, তারসহ গ্রামের অধিকাংশ কৃষকের জমিতে ভয়ঙ্করভাবে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। পোকা দমনের জন্য প্রায় সকল কৃষক দানাদার ও তরল জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করছেন, কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা মাজরার আক্রমণ। মাজরার পাশাপশি ধান গাছে ঘাস ফঁড়িং পোকারও আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। একই গ্রামের কৃষক পিন্টু অভিযোগ করেন, আমরা ধান নিয়ে চরম বিপদে থাকলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কেউ ধানের খোঁজখবর নেয়নি। একই ধরনের অভিযোগ করে কৃষক জাকাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামে ফসলের দেখভালের জন্য যাকে দায়িত্ব দেয়া আছে বেশিরভাগ কৃষক তাকে চেনেন না। এ কারণে পোকা দমনে আমরা পরামর্শ পাচ্ছি না। প্রসাদখালী গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের মাঠে আমন ধান গাছে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাজরা পোকার আক্রমণ হয়েছে। পোকা দমন করা না গেলে ধানের ফলনে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে । এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, যেসকল এলাকায় ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে সেই এলাকার কোনো কৃষক আমাদের বিষয়টি জানায়নি। দ্রুত ওই এলাকায় কৃষি অফিস থেকে অফিসার পাঠিয়ে মাজরা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে।