× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চৌদ্দ বছরে কর্ণফুলীর প্রশস্ততা কমেছে অর্ধেক!

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার

গত চৌদ্দ বছরে কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা কমে অর্ধেকে নেমেছে। দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু পয়েন্টে কর্ণফুলীর প্রশস্ততা এখন ৪১০ মিটার। ২০০৬ সালে এই সেতু নির্মাণের সময় এডিবির মাস্টারপ্ল্যান ও বিএস শিট অনুযায়ী কর্ণফুলীর প্রশস্ততা ছিল ৮৮৬.১৬ মিটার।
দখলে দূষণে কর্ণফুলীর এই হাল বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নদী বিশেষজ্ঞরা। তাদের আশঙ্কা, কর্ণফুলী রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়া না হলে অদূর ভবিষ্যতে প্রমত্তা কর্ণফুলী নদী খালে পরিণত হবে। কার্যক্ষমতা হারিয়ে অচল হয়ে পড়বে চট্টগ্রাম বন্দর।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্ণফুলী নদী নিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। যেখানে কর্ণফুলী দখল ও দূষণের ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে।
কর্ণফুলী দখল জরিপ প্রতিবেদন-২০২০ নামে প্রতিবেদনটি সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান। গত ৩০শে আগস্ট থেকে ২১ দিনব্যাপী চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতু থেকে নগরের ফিরিঙ্গিবাজারের মনোহরখালী পর্যন্ত এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু নির্মাণের সময় এডিবি মাস্টারপ্ল্যান ও বিএস শিট অনুযায়ী কর্ণফুলীর প্রস্থ ছিল ৮৮৬.১৬ মিটার। কিন্তু চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন কর্তৃক তৈরি নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে শাহ আমানত সেতুর নিচে বর্তমানে ভাটার সময় নদীর প্রস্থ থাকছে মাত্র ৪১০ মিটার।
জোয়ারের সময় চর অতিক্রম করে তা সর্বোচ্চ ৫১০ মিটার পর্যন্ত হয়।
এ ছাড়া ভরাট হয়ে যাওয়া প্রায় নদীর ৩০০ মিটার এলাকা দিয়ে কোনো প্রকার নৌযান চলাচল করতে পারে না। এ কারণে স্থানীয়রা কর্ণফুলী নদীর মাঝ বরাবর অঘোষিত ঘাট বসিয়ে যাত্রী পারাপার করছে।
প্রতিবেদন আরো বলা হয়, এডিবির মাস্টারপ্ল্যান ও বিএস শিট অনুযায়ী রাজাখালী খালের মুখে কর্ণফুলীর প্রস্থ ৮৯৮ মিটার, কিন্তু বাস্তবে তা মাত্র ৪৬১ মিটার। চাক্তাই খালের মুখে কর্ণফুলীর প্রস্থ থাকার কথা ৯৩৮ মিটার, কিন্তু বর্তমানে সেখানে আছে ৪৩৬ মিটার। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কর্তৃক নির্মিত মেরিনার্স পার্ক এলাকায় কর্ণফুলীর প্রশস্ততা ৯৮১ মিটার হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে আছে ৮৫০ মিটার। যদিও সেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষ এখন ড্রেজিং অব্যাহত রেখেছে। ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় কর্ণফুলীর প্রস্থ হওয়ার কথা ৯০৪ মিটার, কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ গাইড ওয়াল নির্মাণ করায় সেখানে নদীর প্রশস্ততা নেমে এসেছে ৭৫০ মিটারে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেগুলো হচ্ছে-অবিলম্বে কর্ণফুলী মেরিনার্স পার্ক, সোনালী মৎস্য আড়ত, বেড়া মার্কেটসহ কর্ণফুলী নদী দখল করে গড়ে ওঠা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর গতিপথ ফিরিয়ে আনা। নিয়মিত ড্রেজিং করে ও প্রয়োজনীয় নদী শাসনের মাধ্যমে বাংলাবাজার, সদরঘাট, চাক্তাই ও রাজাখালী এলাকার নৌবন্দর ঝুঁকিমুক্ত করা। নদীর পাড়কে স্থায়ীভাবে চিহ্নিত করা ও পাড় রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরি করা এবং প্রস্তাবিত হাইড্রো মরফলোজিক্যাল মডেল স্টাডির মাধ্যমে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত নদীর প্রবাহ ও নদী শাসনে ব্যবস্থা নেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া, অধ্যাপক নোমান সিদ্দিকী, কর্ণফুলী গবেষক ড. মো ইদ্রিস আলী, অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, অধ্যাপক মনোজ কুমার দে ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ স¤পাদক চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর