সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রুথ বেইডার গিন্সবার্গের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান গোটা ওয়াশিংটন। দীর্ঘদিন যকৃত ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে ৮৭ বছর বয়সে মারা যান তরুণদের আইকন গিন্সবার্গ। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তাকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন । তিনি ছিলেন কোর্টের সবচেয়ে জ্যৈষ্ঠ সদস্য। কোর্টের লিবারেল উইংয়ের এই বিচারক ধারাবাহিকভাবে প্রগতিশীল ভোট দিয়েছেন সমাজের সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যু গর্ভপাত অধিকার, সমকামী বিয়ে, ভোটাধিকার, অভিবাসন নীতি, স্বাস্থ্য প্রভৃতি ইস্যুতে। এই বয়সে একের পর এক প্রগতিশীল মত দেওয়ায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন অন্যরকম রকস্টার। নির্বাচনের মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে সুপ্রিম কোর্টের উদারপন্থী বিচারপতি গিন্সবার্গের মৃত্যুতে নির্বাচনী অংক অনেকটাই বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। করোনা মহামারি মোকাবেলায় রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন সরকারের পারফরমেন্সে খুশি নয় প্রচুর রিপাবলিকান সমর্থক।
এমনকি অনেকে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রয়াত বিচারপতি গিন্সবার্গের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন তা নিয়ে এখন তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে, যার জেরে হঠাৎ করেই কোভিড মহামারি ইস্যু চাপা পড়ে গেছে। বিচারপতি গিন্সবার্গের মৃত্যুর পরদিনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়ে দেন, শূন্য পদ পূরণে তিনি দ্রুত একজন বিচারপতিকে মনোনয়ন দেবেন। তিনি বলেন, আগামী শুক্র বা শনিবারের মধ্যেই তিনি তার মনোনীত প্রার্থীর নাম জানাবেন। সঙ্গে সঙ্গেই তার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। বাইডেনের কথায়, নির্বাচনের আগে নতুন কোনো বিচারপতি নিয়োগ করা যাবে না। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট যদি সত্যিই তা করেন, তাহলে তা হবে ‘ক্ষমতার চরম অপব্যবহার'। ডেমোক্র্যাটদের প্রধান আশঙ্কা, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের নয়-সদস্যের বেঞ্চে রক্ষণশীল এবং রিপাবলিকান সমর্থক একজন বিচারপতিকে নিয়োগ করবেন এবং তার ফলে সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘকালের জন্য রিপাবলিকানদের একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।যুক্তরাষ্ট্রের এই বিচারপতিদের ক্ষমতার মেয়াদ আমৃত্যু পর্যন্ত থাকে এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় তদের নিয়োগ হয়। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে, ট্রাম্প শিবির এখন অবধারিতভাবে চাইছে এই বিতর্ক যেন নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। পাশাপাশি একে কাজে লাগিয়ে কোভিডের কারণে ক্ষুব্ধ রিপাবলিকান সমর্থকদের যাতে দলে ফিরিয়ে আনা যায়। কারণ কথায় বলে না- 'ভোট বড় বালাই'!