× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

লটারির অভিশাপ

অনলাইন

নিজস্ব সংবাদদাতা
(৩ বছর আগে) সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০, বুধবার, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

কলিন ওয়েয়ার এবং তাঁর স্ত্রী ক্রিস্টিন ২০১১ সালে ১৬১ মিলিয়ন ইউরোর জ্যাকপট জিতেছিলেন। তারা স্কটল্যান্ডের সর্বকালের সেরা লোটো বিজয়ী বলে পরিচিত। বিরাট অংকের অর্থ জেতার পর প্রাক্তন এই ক্যামেরাম্যান তা খরচ করার জন্য কোনো কসুর করেননি।

গাড়ি, গহনা এবং সম্পত্তি যেমন করেছেন , তেমনই তার প্রিয় ফুটবল ক্লাবে অর্থদান করেছেন। এছাড়া বেশকিছু সামাজিক কাজে এবং চ্যারিটেবল ট্রাস্টে লোটোয় জেতা অর্থ ব্যয় করেছেন। নিজের দুই সন্তান ৩২ বছরের কার্লি এবং ৩০ বছরের জেমির জন্যও দেদার পয়সা উড়িয়েছেন। এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল।

কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। ৩৮ বছরের ঘরকন্না করার পর গত বছর গ্রীষ্মে স্ত্রী ক্রিস্টিনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় কলিনের।
সেই বছরই সেপসিসে মৃত্যু হয় হতভাগ্য কলিনের। ততদিনে তার পুঁজির অর্থ নেমে এসেছে ৪০ মিলিয়ন ইউরোয়। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তবে কলিনের বন্ধু বান্ধবরা জানাচ্ছেন , তিনি মোটেই কিপ্টে প্রকৃতির ছিলেন না। তাই কলিন শুধু নিজের জন্যই নয়, নিজের প্রিয়জনদেরও দামি গাড়ি, বাড়ি , উপহার দিতেন।

মৃত্যুর একমাস আগে বন্ধু প্যাট্রিক থিসেলের থেকে তাঁর ক্লাবের ৫৫শতাংশ শেয়ার কিনে নেন, যাতে ক্লাবটি বেদখল না হয়ে যায় এবং স্থানীয়রাই তার দায়িত্বে থাকতে পারে। এহেন দিলদরিয়া কলিনের জীবন মাঝপথে থেমে যাবে তা বোধহয় কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। কিন্তু কলিন -ক্রিস্টিনই প্রথম নয় যাঁরা লটারির অভিশাপের শিকার হয়েছেন। বছর পঁয়ত্রিশের মাইকেল ক্যারোল, লোটো লাউট বলে পরিচিত ছিলেন। ১০ মিলিয়ন ইউরো জিতেছিলেন লটারি থেকে।

সেই টাকা তিনি অনায়াসেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এখন প্রায় ১২ ঘণ্টা কাঠ কেটে এবং ব্যাগভর্তি কয়লা বহন করে জীবন নির্বাহ হয় তাঁর। সোনার পালঙ্ক ছেড়ে সাধাসিধে জীবন কাটাচ্ছেন এই লটারি বিজেতা। আদ্রিয়ান এবং গিলিয়ান বাইফোর্ড ২০১২ সালে ১৪৮ মিলিয়ন ইউরো জিতেছিলেন। তবে সেই সুখ এক বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি। গত বছর গিলিয়ানের বিরুদ্ধে তার প্রাক্তন প্রেমিক গ্যাভিন ইনিসকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। আদ্রিয়ানও একাধিক সম্পর্কের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েন।

শেষে সব কিছু ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যান। ২০০৩ সালে ১.৮ মিলিয়ন ইউরো জিতেছিলেন কণিষ্ঠতম বিজেতা ক্যালি। কোকেন, প্লাষ্টিক সার্জারি , পোশাকের পেছনে দেদারে নিজের টাকা উড়িয়ে দেন এই তরুণী। ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদ তাকে গ্রাস করতে থাকে।

ভুল বুজতে পেরে ধীরে ধীরে সব ছেড়ে জীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসেন ক্যালি। এক সাক্ষাৎকারে , টাকার পরিবর্তে তিন সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতেই বেশি ভালো লাগে বলে জানিয়েছেন বছর ত্রিশের জননী। ২০০৫ সালে রজার ও লারা ১.৮ মিলিয়ন ইউরো জিতেছিলেন লটারি থেকে।

তবে ২০১৩ সালেই দম্পতির বিচ্ছেদ হয়ে যায় , সব টাকা খুইয়ে এখন একে অপরকে দোষারোপ করছেন নিজেদের দুর্ভাগ্যের জন্য। এরকম উদাহরণ ভুরি ভুরি আছে। কথায় বলে অর্থই অনর্থের কারণ। তাই লোটোর নেশায় মগ্ন না হয়ে, পরিশ্রম করেই অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করা ভালো। তাতে সুখ এবং শান্তি দুটোই বজায় থাকে।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর