আগামী ৩রা নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেই জয়ী হন না কেন, যথাযথভাবেই নির্বাচন-পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি নির্বাচনে হেরে গেলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছাড়া নিয়ে প্রতিশ্রুতি করতে একাধিকবার অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। দেশটির নির্বাচন-পরবর্তী প্রক্রিয়ার অখ-তা রক্ষায় তার প্রশ্নবিদ্ধ আচরণের মধ্যে ক্ষমতার সুশৃঙ্খল হস্তান্তর হবে বলে নিশ্চিত করলেন শীর্ষ সিনেট রিপাবলিকান নেতা। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, নির্বাচনে যেই জয়ী হন না কেন, আগামী ২০শে জানুয়ারি একটি শান্তিপূর্ণ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
বুধবার সাংবাদিকরা ট্রাম্পের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, নির্বাচনে হেরে গেলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন কিনা তিনি। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, দেখি কী হয়। বর্তমানে জনমত জরিপে তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের চেয়ে নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প।
এমতাবস্থায় নির্বাচন পরবর্তী ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। তার এমন বক্তব্যে মার্কিন রাজনৈতিক মহলে তীব্র সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক মার্কিন ভোটার ডাকযোগে ভোট দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাধারণত এ প্রক্রিয়ায় দেওয়া ভোটগুলোর গণনা শেষ হতে বিলম্ব হয়ে থাকে। এতে আপাতদৃষ্টিতে প্রাথমিক ফলাফলে ট্রাম্প জয়ী প্রতীয়মান হতে পারেন। তবে সকল ভোট গণনা শেষে তিনি হেরেও যেতে পারেন। সাধারণত ডাকযোগে পাঠানো ভোটগুলোর গণনা শেষ হতে বেশ কয়েকদিন দেরি হয়ে থাকে। ট্রাম্প প্রাথমিক ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতীয়মান জয়কে চূড়ান্ত দাবি করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডাকযোগে ভোটদানের প্রক্রিয়াকে অনিরাপদ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। এখন অবধি সকল মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী তাদের পরাজয় মেনে নিয়েছেন। ট্রাম্প যদি হারেন ও ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে তা দেশটির ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সৃষ্টি করবে।
এদিকে, ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন অবশ্য বলেছেন, ট্রাম্প হারার পর ক্ষমতা ছাড়তে না চাইলে তাকে জোর করে সরিয়ে দিতে পারবে সামরিক বাহিনী। তিনি বলেন, ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যগুলো অযৌক্তিক। বৃহস্পতিবার বাইডেনের মুখপাত্র পলিটিকোকে জানান, বাইডেন পূর্বেও ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরে অংশ নিয়েছেন, এবারও নেবেন।
ডেমোক্র্যাটরাতো বটেই, নিজদলের সদস্যরাও ট্রাম্পের শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রতিশ্রুতি না দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের সংখ্যাগুরু নেতা ম্যাককনেল বৃহস্পতিবার এক টুইটে লিখেন, ৩রা নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ২০শে জানুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১৯৭২ সাল থেকে যেভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হয়ে আসছে, ঠিক সেভাবে এবারও সুশৃঙ্খল হস্তান্তর হবে।
নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অপর এক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। তিনি এও বলেছেন, আমরা রিপাবলিকানরা যদি হেরে যাই, তাহলে ফলাফল মেনে নেবো।