কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে রোপণকৃত আড়াই হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চম দফায় বন্যায় প্রান্তিক কৃষকদের চলতি মৌসুমে রোপণকৃত রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। অনেক কৃষক এ বছর অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে রোপণকৃত আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় একই জমিতে দুই থেকে তিনবার পর্যন্ত আমনের চারা রোপণ করেও শেষ রক্ষাটুকুও পায়নি। এভাবে বার বার আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ও আমন ধান উৎপাদন নিয়ে প্রান্তিক কৃষকরা বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের পানিমাছকুটি গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী বাদল, ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের কৃষক কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার ও বড়ভিটা ইউনিয়নের কৃষক সিরাজুল হক ও বাবুল হোসেন জানান, তাদের প্রত্যেকের চার থেকে পাঁচ বিঘা জমির রোপণকৃত আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এভাবে প্রতিদিন অতিবৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে আমাদের আরো আমনের ক্ষেত তলিয়ে যাবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। অপরদিকে বাজারে বেড়েছে সবজিসহ অন্যান্য চাল, ডাল, মাছ, মাংসসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যের দাম। নিম্নআয়ের মানুষদের কাজকর্ম না থাকায় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশীদ জানান, চলতি আমন মৌসুমে এ উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৪২৬ হেক্টর। আমাদের আমন ধান রোপণ করা (অর্জিত) হয়েছে ১১ হাজার ৭২০ হেক্টর। অতিবৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে এ উপজেলায় আড়াই হাজার হেক্টর আমনের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। আশা করছি বৃষ্টিপাত কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেত থেকে পানি বের হলেই ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে এ পর্যন্ত রোপণকৃত ৫৫ হেক্টর আমন ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার পরেও এ উপজেলার আমন উৎপাদনের কোনো ঘাটতি থাকবে না বলে তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন। তবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত বলেন, এবার শুকনা খাবার পেয়েছি তবে জি’আর প্রকল্পের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি, বরাদ্দ পেলে বন্যার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হবে। পানিতে ডুবে থাকা বাড়িঘরের তালিকা করা হচ্ছে।