রোববার দুপুর ২টার দিকে চায়না নৌ-চ্যালেন দিয়ে ফেরি কুমিল্লা স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে ডুবোচরে আটকে যাওয়া পর থেকে সাময়িকভাবে সব কটি ফেরি চলাচল স্থগিত রেখেছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। দৈনিক মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম। এ নিয়ে চলতি মাসে চতুর্থ বারের মত পুরোপুরি বন্ধ রাখা হলো ফেরি চলাচল। এদিকে ফেরি চলাচল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উভয় ঘাটেই আটকা পড়েছে কয়েকশ যানবাহন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই নৌপথে আসা যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। রোবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সংযোগ সড়কে আটকা পড়েছে দেড়শ ছোটো গাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক আছে ৬০টি ও কাভার্ড ভ্যান আছে ১০টি। শিমুলিয়া ঘাটেও দেড় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল স্থগিত রাখায় আমরা সকল যানবাহনগুলোকে বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করতে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি।’
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ফেরিঘাট সূত্র জানায়, দুই মাসের বেশি সময় ধরে নৌপথের মূল দুটি চ্যালেনে নাব্যতা-সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল ফেরি চলাচল।
প্রতি বছর এই নাব্যতা সংকট নিরসনে ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান হলেও বর্ষার মৌসুমে নদীর পাড় ভাঙন ও স্রোতে ভেসে আসা প্রচুর পলি মাটি চ্যালেন মুখের বিভিন্ন স্থানে জমা হয়ে ডুবোচর সৃষ্টি হয়। বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ ডুবোচরে খননযন্ত্র বসিয়ে পলি অপসারণ করলেও স্রোতের পানিতে ভেসে আসা পলি মাটি আবার ডুবোচর সৃষ্টি করে। এর ফলে ফেরিগুলো ডুবোচরে আটকে দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে গত দুই সপ্তাহ ধরে নৌপথে সীমিত করা হয় ফেরি চলাচল। নৌপথে ১৩টি ফেরি সচল থাকলেও কে-টাইপের মাত্র ৫টি ফেরি স্বল্পসংখ্যক যানবাহন নিয়ে চলাচল করছিল। সবশেষ রোববার দুপুর ১টার দিকে কে-টাইটের ফেরি কুমিল্লা স্বল্পসংখ্যক যানবাহন লোড নিয়ে কাঁঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়া ছেড়ে যায়। পদ্মা সেতুর ২৬নং পিলারের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় ফেরিটি ডুবোচরে আটকে যায়। এরপর থেকে স্থগিত রাখা হয় ফেরি চলাচল।
জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম মুঠোফোনে দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, কাঁঠালবাড়ি থেকে সীমিত যানবাহন লোড নিয়ে ফেরি কুমিল্লা শিমুলিয়া যাচ্ছিল। ফেরিটি পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় চায়না নৌ-চ্যালেনে আটকে যায়। এরপর ফেরিটি সামনে এগুতে না পারলে ফেরিটি ফের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ফিরে আসে। এরপর থেকেই ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত আছে। কবে বা কখন থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে তা এখনি ঠিক বলা যাচ্ছে। আমরা সকল যানবাহন ও যাত্রীদের বিকল্প নৌপথ হিসেবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ ব্যবহার করতে অনুরোধ জানিয়ে দিয়েছি।’