করোনা মহামারিতে নাস্তানাবুদ পুরো বিশ্ব। রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি অনেকটাই বিপর্যস্ত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এই অবস্থা থেকে মানুষ কবে রেহাই পাবে এটা কারোরই জানা নেই। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে অন্যান্য অফিস-আদালত খুললেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে সেটা নিয়ে এখনো রয়েছে ধোঁয়াশা। এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অবস্থায় অনেকে শিক্ষার্থী টিউশন করে চালাতেন নিজের পড়ালেখার খরচ। এই উপার্জনে চলতো অনেকের পরিবারও।
এ সময় ওই সকল শিক্ষার্থীদের আশার আলো দেখিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক কাজী আপন তিবরানী। এই কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে তুলেন ভিক্টোরিয়া ই-কমার্স ফোরাম। নিজ খরচে ইতিমধ্যে এই ফোরামের ১ হাজার ২৫০ জন্যকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। গত কয়েকদিন ধরে চলছে স্কিল ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণও। তার ইচ্ছা ভবিষ্যতে এই ফোরাম ভালো মানের উদ্যোক্তা তৈরি করার। বিশেষ করে বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়ন করার। প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিক্টোরিয়া ই-কমার্স ফোরাম নামে একটি পেইজ খোলেন কাজী আপন তিবরানী। এখানে ভিক্টোরিয়া কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যুক্ত রয়েছেন। এ পর্যন্ত এই পেজে প্রায় ৭০ হাজার সদস্য যুক্ত হয়েছেন। জানতে চাইলে কাজী আপন তিবরানী বলেন, ভিক্টোরিয়া ই-কমার্স ফোরাম গত ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করা হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় টিউশন করতো, এখনতো সেটা নেই। তাই আমি মনে করলাম তারা উপার্জন করতে পারে এমন কোনো ব্যবস্থা করার। আমি তাদের (শিক্ষার্থী) নিয়ে প্রথমে ওতোটা আশাবাদী ছিলাম না যে, তারা এই ই-কমার্স ব্যবসায়ে উদ্বুদ্ধ হবে। তবে যোগাযোগ করার পর সবার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এর পর থেকেই এটা শুরু করলাম। তিনি বলেন, এটা শুধুই ই-কমার্স বিজনেস না। মূলত আমি চাচ্ছি এখান থেকে বিভিন্ন উদ্যোক্তা তৈরি করতে। আমার সাধ্য অনুযায়ী তাদের ফ্রি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেয়ার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে অনেকগুলো প্রশিক্ষণ শুরু করেছি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে আপন তিবরানী বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে আমার এখানে কোনো বিজনেস নেই বা থাকবেও না। তবে আমার একটাই পরিকল্পনা, যারা এই ফোরামের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন তাদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেয়া। বিশেষ করে, কৃষিক্ষেত্রে উদ্যোক্তা তৈরি করা।