× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রায়হানের মায়ের আলটিমেটাম

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১৯ অক্টোবর ২০২০, সোমবার

সিলেটে পুলিশি হেফাজতে রায়হান হত্যার ঘটনায় খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তার মা সালমা বেগম। ঘোষণা দিয়ে বলেছেন- এই সময়ের মধ্যে খুনি এস আই  আকবরসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করলে হরতাল, অবরোধসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে লাগাতার কর্মসূচির হুমকি দেন তিনি। তার দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে বৃহত্তর আখালিয়া এলাকাবাসীও। রোববার দুপুরে সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারীপাড়াস্থ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ  ঘোষণা দেন। এ সময় মা সালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন- ‘আকবরের সঙ্গে রায়হানের কোনো যোগাযোগ ছিল না। বিয়ের পর থেকে রায়হান তার পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতো। আমি কোনোদিন শুনিনি আকবর কিংবা এলাহীর সঙ্গে তার সম্পর্ক বা বিরোধ রয়েছে।
আমার ছেলেকে রাত দুইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত খুব নির্যাতন করেছে। এ সময় রায়হান চিৎকার করে বলেছে- ‘আমি চোরও না ডাকাতও না। আমি তোমাদের মতো একজন পুলিশের নাতি, বিডিআরের ছেলে। আমার মাকে ফোন দিয়েছি, টাকা নিয়ে আসবে। আমার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে, তোমরা আমাকে মেরো না।’ তিনি বলেন- ‘আমার বাচ্চা কোনো দল করতো না। আমার বাচ্চাকে কে বা কারা নির্মমভাবে হত্যা করলো। আমার বাচ্চার হত্যার বিচারের জন্য অবিলম্বে আকবর ভূঁইয়ার গ্রেপ্তার চাই।’ তিনি দাবি করেন- ‘হত্যাকাণ্ডের পেছনে খুব বড় একটা কালো পাহাড় আছে। তা না হলে মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য আমার ছেলের জীবন যেতে পারে না। পুলিশের দায়িত্ব মানুষকে সেবা দেয়া, মানুষকে সহযোগিতা করা। পুলিশের দায়িত্ব না একজনকে মেরে ফেলা। আমরা সব সময় পুলিশের ওপর আস্থা জ্ঞাপন করে আসছি। কিন্তু এই পুলিশ জীবন নিয়ে গেছে, জীবন কী দিতে পারবে- প্রশ্ন করেন সালমা বেগম। আমি যদি আজ বলি ১০ হাজার কেনো, ৫০ হাজার টাকা দেবো- আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন।’ ক্ষতিপূরণ প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন- ‘আমার ছেলেকে তো আর ফিরিয়ে দেয়া হবে না। এখন ক্ষতিপূরণ হচ্ছে- খুনিদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দিলে আমার ক্ষতিপূরণ পাওয়া হয়ে যাবে।’ বিচার না হলে তার ছেলের আত্মা ও মায়ের মন শান্তি পাবে বলে জানান তিনি। প্রশ্ন তুলে বলেন- ‘কেন রায়হানকে খুন করা হলো সেটির রহস্য উদ্‌ঘাটন করা প্রয়োজন।’ এদিকে সংবাদ সম্মেলনে রায়হানের মা ও সালমা বেগমের পক্ষে ৬টি দাবিও উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- ১. রায়হান হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি, ২. রায়হান হত্যায় জড়িত পুলিশের এস আই আকবর ভূঁইয়াসহ দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, ৩. পলাতক এস আই আকবর ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারে আইজিপির নির্দেশ, ৪. পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য, ৫. নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, ৬. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের  গ্রেপ্তার না করলে হরতাল-সড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নিহত রায়হানের স্বজন শওকত হোসেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- রায়হান একটি ডাক্তারের চেম্বারে কাজ করতো। কে বা কারা তাকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয়।  ভোরে তৌহিদের মোবাইলফোন থেকে রায়হান ফোন করে বলে তাকে বাঁচাতে। তিনি জানান, ১০ হাজার টাকা নিয়ে থানায় যেতে। ভোরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে গেলে রায়হানের চাচাকে দেখা করতে না দিয়ে সকালে আসতে বলেন। সকালে গেলে রায়হানের শরীর খারাপ করেছে এবং মেডিকেল যেতে বলে। হাসপাতালে ৭টা ৫০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- ‘উপ-পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) গেলে আমরা আশাবাদী হলেও এখন মামলার ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি। তাই তাদের আইনের আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলনে নামবো।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, স্থানীয় কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদি, ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান, কাউন্সিলর  তৌফিক বক্স লিপন, নারী কাউন্সিলর  রেবেকা বেগম, সাবেক কমিশনার জগদীশ দাশ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক ও রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহসহ বৃহত্তর আখালিয়ার লোকজন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর