× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মাগুরায় চাল-সবজিতে উত্তাপ বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ

বাংলারজমিন

মাগুরা প্রতিনিধি
২০ অক্টোবর ২০২০, মঙ্গলবার

মাগুরায় চাল ও সবজিতে হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। গেল কয়েক সপ্তাহের মতোই সবজির দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। এরইমধ্যে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। গত কয়েক সপ্তাহ আগে কাঁচামরিচের দাম সাধারণ ক্রেতাদের হাতের নাগালে ছিল কিন্তু বর্তমানে কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে ক্রেতা দিশাহারা। সাধারণত প্রতিদিনের রান্নার কাজে কাঁচামরিচের বিকল্প নেই। তাই যত দামই হোক সব শ্রেণির মানুষ কেউ পরিমাণে অল্প আবার কেউ বেশি পরিমাণে কাঁচামরিচ কিনছে। আবার দাম বেড়ে যাবার ভয়ে অনেক ক্রেতা বেশি করে কাঁচামরিচ কিনে ঘরে রাখছে।
গেল সপ্তাহে যেখানে ২শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ, সেখানে আজকের বাজারে ২০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছে অতিবৃষ্টির কারণে জেলার অনেক কৃষকের কাঁচামরিচের ক্ষেত পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। খুচরা কাঁচামরিচের সংকট থাকার কারণে দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ ২শ’ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়।
মাগুরা পুরাতন বাজারে শাহ আলম নামে এক স্কুল শিক্ষক জানান, এক সপ্তাহ আগে আমি বাজার থেকে কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম কিন্তু বর্তমান বাজারে কাঁচামরিচ ২৪০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা সাধারণ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আমি বেসরকারি কেজি স্কুল শিক্ষক। আজ ৮ মাস স্কুল বন্ধ তাই আয়ের পথ বন্ধ। আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের বেঁচে থাকা খুবই কঠিন।
এদিকে সরকার পাইকারি বাজারে চালের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এর প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। দাম বেঁধে দেয়ার আগে বাড়তি যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছিল সেই দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে চাল। বর্তমানে মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে  ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ টাকা থেকে ৬৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছে, বাজারে চালের কোনো সংকট নেই। আমরা সরকারের দেয়া নিময়-নীতি অনুসারে চাল বিক্রি করছি। কয়েক মাসের মধ্যে নতুন ধান উঠলে আগামীতে চালের দাম কিছুটা কমবে।
চাল কিনতে আসা নাজমুল নামে এক অটোচালক বলেন, আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জীবন-জীবিকা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। সারাদিন ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা ভাড়া আদায় হয়। মালিককে ভাড়ার টাকা দিয়ে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা থাকে। এতে সংসার চলে না। বাজারে চাল-সবজি-আলুসহ সবকিছুর জিনিসের দাম বাড়তি। তাই সব কিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদের বাঁচা বড় কঠিন। চালের দাম বাড়তি থাকায় এখন মাঝে মাঝে আটা কিনে সংসার চালায়।
এদিকে, মাগুরা পুরাতন বাজারে সবজির দাম চড়া থাকায় সাধারণ নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। বর্তমানে বেগুন ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, নতুন সবজি পালংশাক ৭০-৮০ টাকা, বাঁধা কপি ৬০ টাকা ফুল কপি ৫০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, শিম ৯০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ২০-২৫ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৪০-৪৫ টাকা। এ ছাড়া দেশি পিয়াজ ৮০-৯০ টাকা, রসুন ৮০-৯০ টাকা ও আদা ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকার আলুর দাম নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির কথা বললেও তা মানছেন না অনেক ব্যবসায়ী। পাইকারি বাজারে আলু  ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা।
এদিকে দাম বেড়েছে ডিমের। প্রতি হালি ডিম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা। সাধারণ দোকানে ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। সবকিছুর দাম বাড়াতে বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষের।
মাগুরা পুরাতন বাজারের সবজি ব্যবসায়ী শহিদ মিয়া জানান, আমি প্রতিদিন পাইকারি হাট থেকে সবজি কিনে পুরাতন বাজারে বিক্রি করি। বর্তমানে বাজারে সবজির তেমন সংকট নেই তবুও আমাদের পাইকারি হাট থেকে প্রতিদিন ৪০-৫০ টাকার ওপরে সবজি কিনতে হচ্ছে। তাই বাড়তি দামে আমাদের সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলায় কর্মরত সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান জানান, মাগুরা সদরের বিভিন্ন বাজারে আমাদের মনিটরিং চলছে। চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। যদি কেউ কোনো পণ্য বাড়তি লাভের আশায় গোডাউনজাত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার বাজার ও হাটগুলোতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বাজারে কোনো পণ্যের সংকট নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করছি।

 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর