মার্চে প্রথম রাউন্ডের পর স্থগিত হয়ে যায় ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ। করোনা মহামারির কারণে ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও লীগ আর শুরু করা সম্ভব হয়নি। এমনকি এই বছর আর হচ্ছে না বলেও জানা গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সূত্রে। তবে আগামী বছর জানুয়ারিতে লীগ পুনরায় মাঠে গড়াতে পারে। সেই ক্ষেত্রে থাকবে ক্লাবগুলোর জন্য বিসিবি অর্থ সহযোগিতা। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটারদের করোনা পরীক্ষা, জৈব সুরক্ষা বলয়ের (বায়ো বাবল) সব ব্যয়ভারও বহন করবে বিসিবি। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন। ঢাকা লীগ ফের মাঠে ফেরাতে ক্রিকেট কমিটি অফ ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম)-এর সঙ্গে কাজ করছেন তিনি।
গতকাল সংবাদ মাধ্যমকে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন কথাটা ঠিক না। সিসিডিএম চেয়ারম্যান তো আছেনই, অন্যরাও আছে। অবশ্য উনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন যদি আমরা করতে চাই কোথায় করতে পারি, কীভাবে করতে পারি, প্রোটোকলগুলো আমরা মেইনটেইন করতে পারবো কী না? জিনিসটা আসলে জটিল, খুব কঠিন। এখানে মাত্র ৩টা দল বায়ো বাবলে থেকে খেলছে, পরবর্তীতে আমরা ৫-৬ টা দল নিয়ে একটা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট করতে যাচ্ছি। তারপর প্রিমিয়ার লীগ, আপনি দেখেন ওখানে ১২টি দল। যদি প্রতিটি দলে ১৫ জন করে প্লেয়ার, কোচ, ম্যানেজম্যান্টসহ ধরি অন্তত ২০ জন। প্রায় ২৭০ জন লোককে একসঙ্গে আবাসনের ব্যবস্থা করার মতো জায়গা কোথায় আছে এটা একটা বড় প্রশ্ন আমাদের জন্য। এটা নিয়ে কাজ করছি।’
অন্যদিকে ঢাকা লীগের এই আসর চলতি বছরে আয়োজন সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেন, ‘এ বছর তো আসলে সম্ভব না। আমরা শুরু করলে জানুয়ারিতে করতে পারি। কারণ টি-টোয়েন্টি লীগটা নিয়ে আমরা অলরেডি কমিটেড।
এটা নভেম্বরে শুরু করলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হবে। সে পর্যন্ত তো আগে যাই আমরা, তার পরে ক্লাবগুলোকে ট্রেনিং করার সুযোগের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের খেলোয়াড়দের একত্রিত করতে হবে। সে হিসেবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ বা ১০ তারিখের আগে মনে হয় না সম্ভব হবে।’
জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের। সফরে তারা খেলবে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। তাই জানুয়ারিতে লীগ আয়োজন বেশ কঠিন। তবে সুজন মনে করেন ক্যারিবীয়রা এলেও লীগটা শুরু করা যাবে। তিনি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ এলেও প্রিমিয়ার লীগের ক্রিকেটাররা প্রিমিয়ার লীগ খেলবে, এটা আগেও হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হবে, ঘরোয়া ক্রিকেটও তার মতো হবে। সে ক্ষেত্রে যারা আন্তর্জাতিক খেলবে তারা হয়তো ঘরোয়া খেলতে পারবে না। যদি ক্লাবগুলো চিন্তা করে আমরা আমাদের প্লেয়ার ছাড়া খেলবো না সে ক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়ার পর হয়তো আমাদের চিন্তা করতে হবে। আগামী বছর আসলে এত ব্যস্ত সূচি যে আপনি হয়তো সেই সুযোগও পাবেন না। আমাদের মার্চ এপ্রিলে কিছুটা ফাঁকা সময় আছে। এ ছাড়া তো মনে হয় নাই।’
লীগ আয়োজনে বিসিবি ক্লাবগুলোকে অর্থ সহযোগিতা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন খালেদ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘প্রণোদনা বলতে বিসিবি তো ক্লাবকে টাকা দিবে না। বিসিবি খুব বেশি হলে লোনের ব্যবস্থা করতে পারে ক্লাবের জন্য। আমি জানি না বিসিবির মতামত কী? ক্লাবগুলো পারবে না এটা বিশ্বাস করি না। সবই তো চলছে। ব্যবসা বানিজ্য আটকে নেই। আমি জানি টাফ হবে ক্লাবগুলোর জন্য। কিন্তু এমন টাফও হবে না যে প্রিমিয়ার লীগ চালাতে পারবে না। তাদের একটা বাজেট তো থাকেই। সে সব চিন্তা করেই তো তারা ক্লাবগুলো করে।’
বিসিবি সব ক্রিকেটারের কোভিড-১৯ পরীক্ষার খরচও দিবে। তবে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের দায়িত্ব নিবে না বিসিবি। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘এগুলোতো ( কোভিড টেস্টে) বিসিবি করবে। আমি বলেছি পেমেন্ট সেক্টরের বিষয়টা তো বিসিবি করতে পারে না। কিন্তু বাড়তি যে বিষয়গুলো যদি হোটেলে রাখতে হয় সেটা না হয় বিসিবি নেগোশিয়েট করবে। প্লেয়ারদের পেমেন্টের ব্যাপার তো বিসিবি নেগোশিয়েট করবে না।’