× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টাকা দিলেই মেলে নদীতে ইলিশ ধরার অনুমতি

দেশ বিদেশ

সুমন শীল, গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) থেকে
২৪ অক্টোবর ২০২০, শনিবার

 নদীতে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও নৌপুলিশকে টাকা দিলেই মেঘনায় ইলিশ ধরার অনুমতি পাচ্ছেন জেলেরা। জেলেরা বলছেন, নৌপুলিশ নৌকাপ্রতি দৈনিক তিন থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে মাছ ধরার অনুমতি দিচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষায় ১৪ই অক্টোবর থেকে ৪ঠা নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে তা অমান্য করে বিভিন্ন স্থানে ইলিশ শিকারে নামছেন জেলেরা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কোথাও ঝুঁকি নিয়ে, কোথাও প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ করে’ চলছে ইলিশ শিকার। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নৌকাপ্রতি টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার অনুমতি দিচ্ছে পুলিশ। মেঘনার ইসমানির চর, গোয়ালগাও, রঘুরচর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অবাধে ইলিশ ধরছেন শ’ শ’ জেলে। নিষেধাজ্ঞার পরও কিভাবে তারা মাছ ধরছেন, এ প্রশ্নের জবাবে জেলেরা জানান, নৌকাপ্রতি দৈনিক তিন থেকে চার হাজার টাকা করে নিয়ে ইলিশ ধরার অনুমতি দিচ্ছে নৌপুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে গজারিয়ার জামালদী বাসস্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশায় করে এই প্রতিবেদক যান মেঘনা তীরবর্তী ইসমানির চর বাজারে। নদীর এই অংশে তখন ছোট ছোট ট্রলারে করে অবাধে মাছ শিকার চলছিল। মাঝ নদীতেই জেলেদের ট্রলার থেকে মাছ কিনছিলেন ফড়িয়ারা। নদী তীরেই অস্থায়ী হাট বসিয়ে চলে এসব মাছের বেচাকেনা। এছাড়া রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ইলিশ পরিবহনে নানা কৌশল নেন ফড়িয়ারা। সমপ্রতি মুন্সিগঞ্জ সদরে লাগেজে ভরে ৫০ কেজি মা ইলিশ পরিবহনের সময় মিথুন খান নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে তাকে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইসমানির চর থেকে ট্রলারে করে গোয়ালগাঁও হয়ে এই প্রতিবেদক যান রঘুর চরে। সেখান থেকে মেঘনার পশ্চিম অংশ নয়ানগরে। সড়কপথে চার কিলোমিটার দূরে এখানে এসেও ইলিশ শিকারের একই চিত্র দেখা যায়। প্রতিটি ট্রলারে ছিলেন চার-পাঁচ জন জেলে। মেঘনার বুকে অবাধে চলছে মা ইলিশ শিকার।  গোয়ালগাঁওয়ের জেলে সাগর মিয়া বলেন, জেলেদের কাছ থেকে টাকা তুলতে লোক ঠিক করে দিয়েছে নৌপুলিশ। কেউ ঘুষ না দিয়ে নদীতে নামলেই বিপদ। কিছুক্ষণের মধ্যে এসে ট্রলার, জাল ও মাছ জব্দ করে দেয়া হয় দণ্ড। ইসমানির চরের জেলে দুলাল মিয়া বলেন, ‘ইলিশ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞার সময় যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়, তা অপ্রতুল। তার ওপর মহাজনের ঋণ শোধ করতে জেলেদের ওপর চাপ থাকে। এ কারণে ঘুষ দিয়ে হলেও নদীতে মাছ ধরতে নামছেন জেলেরা। আরেক জেলে সঞ্জীব দাস অভিযোগ করে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা শুরুর সপ্তাহ পার হলেও বেশির ভাগ জেলে ঘুষের বিনিময়ে ইলিশ শিকার করতে দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গজারিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘টাকা নেয়ার কথা আমার কানে এসেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জেলে অভিযোগ করেননি। নৌপুলিশের কোনো সদস্য ঘুষ বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসলাম হোসেন শেখ বলেন, নৌপুলিশ বিশেষায়িত বাহিনী। তাদের ব্যাপারে কথা বলার এখতিয়ার আমার নেই। আমি সবসময় কোস্টগার্ডের সঙ্গে অভিযানে যাই। আর নৌপুলিশ আলাদাভাবে তাদের কার্যক্রম চালায়। তাদের অভিযানের বিষয়ে আমার কাছে বিশেষ কোনো তথ্য নেই। গজারিয়া কোস্টগার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার খন্দকার মনিরুজ্জামান দৈনিক মানবজমিনকে জানান, বিষয়টি আমাদেরও ভাবাচ্ছে। নির্দিষ্ট খবরের পর অভিযানে গেলে দেখা যায় ওই স্থানে জেলেরা নেই। আমাদের অভিযানের খবর ফাঁস হয়ে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর