× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সংকটাপন্ন রফিক-উল হক

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৪ অক্টোবর ২০২০, শনিবার

সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের অবস্থা সংকটাপন্ন। আদ্‌-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক ডা. অধ্যাপক নাহিদ ইয়াসমিন বলেছেন, তিনি এখনো লাইফ সাপোর্টে আছেন। সব মিলিয়ে তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় তিনি আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আমরা সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাকিটা আল্লাহ্‌র ইচ্ছা। গত মঙ্গলবার হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের।
তার অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে নেয়া হয় আইসিইউতে। এরপর থেকে তিনি আইসিইউতেই আছেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ এই আইনজীবীর রোগমুক্তির জন্য দোয়া করছেন দেশের সর্বস্তরের লোকজন। বৃহস্পতিবার আদ্‌-দ্বীন হাসপাতালে তাকে দেখতে যান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, একটা ইতিহাস আমাদের সবার জানা উচিত, এরশাদকে আইনের প্রতি আনতে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের অবদান ছিল। আপনারা সবাই জানেন, তিনি অত্যন্ত বিজ্ঞ আইনজ্ঞ। দেশে অনেকের টাকা-পয়সা থাকে। কিন্তু তারা দান-খয়রাত করে না। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক একজন দানশীল ব্যক্তি। তিনি আরো বলেন, আদ্‌-দ্বীন হাসপাতালে তিনি সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। চিকিৎসকরা দিনরাত তার সেবা করছেন। আমি আশা করি, আল্লাহ্‌ তাকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেবেন।
গত ১৫ই অক্টোবর থেকে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর মগবাজারে আদ্‌-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। এরপর কিছুটা সুস্থবোধ করলে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরে যান। কিন্তু দুপুরের পরপরই ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
জানা গেছে, রক্তশূন্যতা, ইউরিন সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছেন প্রবীণ এই আইনজীবী। তিনি ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর আগে গত জুনে ডায়াবেটিস কমে যাওয়ায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তখনো আদ্‌-দ্বীন হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। তখন তিনি পল্টনের বাসায় অবস্থান করেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২রা নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালের ৭ই এপ্রিল থেকে একই বছরের ১৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল)। কিন্তু কোনো সম্মানী নেননি। পেশাগত জীবনে তিনি কখনো কোনো রাজনৈতিক দল করেননি। তবে, নানা সময়ে রাজনীতিবিদরা সব সময় তাকে পাশে পেয়েছেন। রাজনীতিবিদদের সম্মান সব সময়ই অর্জন করেছেন তিনি। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তার জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়। আর তার এই উদ্যোগকে বিরল বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন আইন অঙ্গনে তার সমসাময়িকরা।
তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান, ২০১১ সালে প্রিয়তমা স্ত্রী ডা. ফরিদা হকের মৃত্যুর পর থেকেই নিঃসঙ্গতা অনুভব করতেন তিনি। এরই মধ্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে তার বাম পায়ে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর থেকে তার স্বাভাবিক হাঁটাচলা ব্যাহত হয়। মাঝেমধ্যে পায়ে ব্যথা হতো। যে কারণে হুইল চেয়ারে যাওয়া-আসা করতে হতো তাকে।
১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে  এলএলবি পাস করেন।  ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন। ব্যারিস্টার  রফিক-উল হক বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর