বন্দরে গত দুদিনে এক নারী ও এক পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার সকালে মদনপুর এলাকার সুরুজ আলী টেক্সটাইল মিলের সামনের রাস্তা থেকে দুই হাটু পিঠ ও কোমরে আঘাত এবং নাক থেঁতলানো রাহিমা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে পুরান বন্দর প্রধানবাড়ি মিছির আলী মিয়ার ভাড়াটিয়া বাসা থেকে ফয়েজ মিয়া (৪২) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রাহিমা মদনপুর বড় সাহেব বাড়ির কৈতারবাগ এলাকার রুহুল আমিনের স্ত্রী। পরিবারের অভিযোগ তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। বকেয়া বাসা ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ফয়েজ মিয়াকে হত্যার অভিযোগে বাড়ির মালিকের স্ত্রী ও উম্মেকুলসুম (৫৫) অপর ভাড়াটিয়া মহিউদ্দিন (৪২) ও তার স্ত্রী শিরিনা বেগম (৩৭) কে আটক করে পুলিশ।
নিহত রাহিমার ভাগ্নে আবদুর রহমান জানান, তার খালা রাহিমা বেগমের বিয়ে হয় মদনপুর বড় সাহেব বাড়ির কৈতারবাগ এলাকার রুহুল আমিনের সঙ্গে। রুহুল আমিন পরে আবারও বিয়ে করেন। এরপর নানা কারণে রাহিমাকে নির্যাতন করত রুহুল।
সতিনের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি কাঁচপুর এলাকার মালেক জুট মিলে কাজ নেন এবং আলাদা জীবনযাপন করেন। শুক্রবার সকালে রাহিমা বেগম কাজে যান। বেলা ২ টায় অফিস ছুটির পরও বাড়ি না আসায় তারা বিভিন্ন জায়গায় রাহিমার খোঁজ করেন। অবশেষে শনিবার সকাল ৭ টায় বন্দরের মদনপুর এলাকার সুরুজ আলী টেক্সটাইল মিলের সামনের রাস্তা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ফয়েজ মিয়ার ভায়রা ভাই সোহেল রানা জানান, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার চরবলাকি এলাকার মৃত আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে ফয়েজ মিয়া ও তার পরিবার দীর্ঘ ৩ বছর ধরে পুরান বন্দর প্রধানবাড়ি এলাকার জনৈক মিছির আলী মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। করোনা জন্য ব্যবসা মন্দা থাকায় ৭ মাসের বাসা ভাড়া বকেয়া রয়েছে। বাসা ভাড়া দিতে না পারায় এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িওয়ার স্ত্রী উম্মেকুলসুমের সঙ্গে ফয়েজ মিয়ার স্ত্রী রোজিনা বেগমের কথা কাটাকাটি হয় । এসময় রাজিনা বেগম বকেয়া বাসাভাড়া ৭ হাজার টাকার মধ্যে ৪ হাজার টাকা প্রদান করে। বাসা ভাড়া বিষয়ে অপর ভাড়াটিয়া মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী শিরানা বেগমকে অবগত করে। শুক্রবার সকালে বাসা ভাড়াকে কেন্দ্র করে ভাড়াটিয়া মহিউদ্দিন ও ফয়েজ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী শিরিনা বেগম ফয়েজকে এলোপাথারী মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় ফয়েজকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বন্দর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) ফখরুদ্দীন ভঁইয়া জানান, মাছ ব্যবসায়ী হত্যাকান্ডে বাড়ির মালিকের স্ত্রী উম্মেকুলসুম, অপর ভাড়াটিয়া মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী শিরিনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। শনিবার সকালে রাহিমার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনায় রাহিমার মৃত্যু হয়েছে। লাশের দুই হাটু , পিঠ ও কোমরে আঘাতের চিহ্ন আছে এবং নাক থেঁতলানো, কান দিয়ে রক্ত ঝরছিল ।