× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গ্রেপ্তার ২১, পালিয়েছে দুই মালিক / আশুলিয়ায় মিনি ক্যাসিনো

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৬ অক্টোবর ২০২০, সোমবার

অভিযানে ঢাকার ক্যাসিনোগুলো বন্ধ হয়ে গেলেও দেড় বছর ধরে মিনি ক্যাসিনোটি চলছিল আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকায়। শনিবার রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে আটক করেছে র‌্যাব। তবে পালিয়ে গেছে ক্যাসিনো পরিচালনাকারী ২ জন। প্লাবন হোসাইন এবং বিল্লাল নামের ২ জনকে খুঁজছে র‌্যাব। র‌্যাব-৪ এর সিনিয়র এএসপি মো. সাজেদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, বিল্লাল এবং প্লাবন হোসাইন জমি ভাড়া নিয়ে টিনের ঘর তুলে সেখানে জুয়ার আসর বসায়। তারাই মূলত এই ক্যাসিনোর আয়োজক এবং অর্থ যোগানদাতা। স্থানীয়ভাবে তারা জমির দালালি সংক্রান্ত কাজ করার পাশাপাশি ক্যাসিনোর ব্যবসা করে। এখান থেকে তারা প্রতিদিন কমপক্ষে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করে।
অভিযান চলাকালে প্লাবন হোসাইন এবং বিল্লাল দুজনে পালিয়ে যায়। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারা দুজনেই ওই এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ‘মিনি ক্যাসিনোটি’ প্রায় দেড় বছর ধরে চলছিল বলে জানিয়েছে র?্যাব-৪।
র‌্যাব সূত্র জানায়, গত শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আশুলিয়ায় ‘মিনি ক্যাসিনো’তে (জুয়ার আসর) অভিযান চালিয়ে মাদকসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)। আশুলিয়ার বাইপাইলের কাইচাবাড়ি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার মোজাম্মেল হক জানান, কাইচাবাড়ি এলাকায় কিছু লোক ক্যারম খেলার আড়ালে ক্যাসিনোসহ মাদকদ্রব্য সেবন করে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে অভিযান চালায় র‌্যাব। ঘটনাস্থল থেকে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সেখান থেকে প্লেয়িং কার্ড, একটি ইলেক্ট্রিক ক্যাসিনো বোর্ড, একশ’ পিস ইয়াবা, ১২ ক্যান বিদেশি বিয়ার, ২২টি মোবাইল ও নগদ ৩৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ঢাকার মো. জুয়েল (২৮), মো. মইদুল ইসলাম (৩২), মো. শরিফ (২৮), মো. দিয়াজুল ইসলাম (২০), মো. এখলাছ (৩৫) ও মো. মঈন মিয়া (২৮), জামালপুরের মো. বিল্লাল (৩৮), মো. সবুজ মিয়া (২৮) ও মো. শিপন (২০), গাইবান্ধার মো. আবু তালেব (২০), মো. আসাদুল ইসলাম (৩০) ও মো. হাবিবুর রহমান (৪৭), টাঙ্গাইলের মো. লিটন (৪৫), ফরিদপুরের মো. রবিউল মোল্ল্যা (২৪), রংপুরের মো. আব্দুল আলিম (৩৫), জয়পুরহাটের মো. আজাদুল ইসলাম (৫০), রাজবাড়ীর মো. সোহেল মোল্ল্যা (৩২), নাটোরের মো. মাসুদ রানা (২০), ময়মনসিংহের মো. রুবেল মিয়া (৩৩), বরিশালের মো. ফজলে রাব্বি (২২) এবং নোয়াখালীর মো. রনি ভূঁইয়া (২৫)। র‌্যাব জানায়, আসামিরা তাদের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছে। ক্যাসিনো বোর্ডের মূল মালিক পলাতক রয়েছে। মূল মালিকসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
রাজধানীর মিরপুরে পাইকপাড়ায় র‌্যাব-৪ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, এই মিনি ক্যাসিনো গত দেড় বছর ধরে চলেছে। প্রতিরাতে এখানে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার জুয়া খেলা হতো। এ ক্যাসিনোতে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত খেলা হতো। রাত যত গভীর হতো ক্যাসিনো তত জমে উঠতো। আর এই জুয়ার আসরে অংশ নিতেন রিকশাচালক, গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে শুরু করে অধিকাংশ নিম্নআয়ের মানুষ। যাদের অনেকেই জুয়ায় আসক্ত হয়ে খুইয়েছেন তাদের নিত্যদিনের আয়সহ মোটা অঙ্কের টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিছুর রহমানের উপস্থিতিতে এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে র‌্যাব-৪ এর একটি দল আশুলিয়া থানাধীন কাইচাবাড়ি এলাকায় ওই অভিযান পরিচালনা করে। মিনি ক্যাসিনো পরিচালনাকারীদের গ্রেপ্তার করা যায়নি জানিয়ে সূত্র জানায়, এই ক্যাসিনো ব্যবসা মালিকানায় রয়েছে প্লাবন হোসাইন ও ওমর ফারুক নামে দুজন। যদিও তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে এই মিনি ক্যাসিনো সম্পর্কে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা জানতে পারবো। দেড় বছর ধরে চলা এই মিনি ক্যাসিনো কাদের ছত্রছায়ায় চলছে এটা বলা খুব মুশকিল। কারণ বাইরে প্রদর্শন করা হয় ক্যারম বোর্ড। আর আড়ালে চলে জুয়ার আসর। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পেরে তখনই অভিযান পরিচালনা করে ক্যাসিনো থেকে অন্তত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র‌্যাব সূত্র জানায়, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি এই বোর্ড আমদানি করা হয়েছে মালয়েশিয়া থেকে। তবে দেখে মনে হচ্ছে সমপ্রতি আমদানি করা হয়নি। ইতিমধ্যে অনেক বড় বড় ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে র‌্যাব। গ্যাংস্টারকে আটক করা হয়েছে। তারা কে কীভাবে এই ক্যাসিনো বোর্ড আমদানি করেছে সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। অবৈধভাবে যারাই এই জুয়ার বোর্ড আমদানি করুক না কেন, খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর