× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তিন বছর পর সাচ্চু হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন

এক্সক্লুসিভ

আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে
২৮ অক্টোবর ২০২০, বুধবার

সোয়া তিন বছরেরও বেশি সময় পর কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর বাজারের পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী ওমর চান ওরফে সাচ্চু (৩২) হত্যা রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পিবিআই। কিলিং মিশনে অংশ নেয়া নান্টু মিয়া (৩২) ও আল-আমিন (৩২) নামে দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের পর তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে তারা জানিয়েছে, দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে তারা এই কিলিং মিশনে অংশ নেয়। মামলার ৭ম ও সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান দুই সন্ত্রাসী নান্টু মিয়া ও মো. আল-আমিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নান্টু মিয়া বাজিতপুর পৌর সদরের দড়িঘাগটিয়া এলাকার মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে এবং মো. আল-আমিন একই এলাকার মো. আমিন উদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে নিহত ওমর চান ওরফে সাচ্চু বাজিতপুর উপজেলার বলিয়ার্দী ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের হাজী আব্দুল জব্বারের ছেলে।
কিশোরগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন পিপিএম জানান, ওমর চান ওরফে সাচ্চু তার ছোট ভাই লায়েস মিয়াকে নিয়ে বাজিতপুর বাজারে পোল্ট্রি ফিড ব্যবসা করতেন। ব্যবসার প্রয়োজনে দুই ভাই সপরিবারে বাজার সংলগ্ন বসন্তপুর এলাকার সুজন মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকতেন। ২০১৭ সালের ২৬শে জুন সকালে ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপনের জন্য তারা সপরিবারে শিমুলতলা গ্রামের বাড়িতে চলে যান।
ঈদ উদ্‌যাপন শেষে ওইদিনই রাত ৯টার দিকে বাসায় চুরির আশঙ্কায় কেবল ওমর চান ওরফে সাচ্চু বসন্তপুরের ভাড়া বাসায় আসেন। একাকী ভাড়া বাসায় রাতযাপন করার সময় রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে দরজা ভেঙে অজ্ঞাত আততায়ীরা ওই বাসায় হানা দেয়। তারা মশারির ভেতরে শুয়ে থাকা সাচ্চুকে লায়েস মনে করে উপর্যুপরি মারপিট ও ছুরিকাঘাত করে। আততায়ীরা মৃত ভেবে চলে যাওয়ার পর মুমূর্ষু সাচ্চু তার ছোট ভাই লায়েসকে ফোন করে শুধু ‘হাসপাতাল’ শব্দটি উচ্চারণ করতে পারেন। এতে অজানা আশঙ্কায় পরিবারের লোকজন গ্রামের বাড়ি থেকে বাসায় গিয়ে সাচ্চুকে রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ২৭শে জুন ঢাকায় হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ২৮শে জুন সাচ্চুর বড় ভাই মো. জামাল মিয়া বাদী হয়ে হেলিম নামে একজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বাজিতপুর থানায় মামলা করেন। এদিকে দুইদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৯শে জুন রাত পৌনে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাচ্চু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার মারা যাওয়ার পর মামলায় ৩০২ ধারা সংযুক্ত করা হয়। প্রায় দুই বছর বাজিতপুর থানার তিন পরিদর্শকসহ ৫ জন তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটির তদন্ত করলেও রহস্য উদ্‌ঘাটিত হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের নির্দেশে ২০১৯ সালের ৩০শে মে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পিবিআই স্থানান্তরের পর মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তার বদলির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৩রা ডিসেম্বর পুলিশ পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। তিনি নিরবচ্ছিন্ন তদন্ত শেষে গত ২১শে অক্টোবর সন্দিগ্ধ হিসেবে নান্টু মিয়াকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারের পর পিবিআইয়ের জেরার মুখে সত্য প্রকাশ করে নান্টু মিয়া। জানায়, ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বের কারণে প্রভাবশালী একটি মহল দুই লাখ টাকায় স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে ভাড়া করে। এই গ্রুপের হয়ে সে কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল। পরে গত ২২শে অক্টোবর নান্টু মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া অপর সন্ত্রাসী মো. আল-আমিনকে শনিবার সন্ধ্যায় বাজিতপুর থেকে গ্রেপ্তারের পর রোববার আল-আমিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান জানান, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পিবিআই কাজ করছে। খুব শিগগিরই তারা ধরা পড়বে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর