× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অভিনন্দন বাইডেন-হ্যারিস, অভিনন্দন বাংলাদেশি-আমেরিকানস্

মত-মতান্তর

এম এস সেকিল চৌধুরী
৮ নভেম্বর ২০২০, রবিবার

রুদ্ধশ্বাস নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো আমেরিকায়। আমেরিকানদের পাশাপাশি দিন রাত জেগে থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে এই নিবার্চন। অবশেষে নানা উৎকন্ঠা ও অনিশ্চয়তার নিবার্চনে বিজয়ী হয়েছেন ‘বাইডেন-হ্যারিস’। অভিনন্দন ‘বাইডেন-হ্যারিস’-কে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ আমেরিকা। বিদ্যায়-বুদ্ধিতে অর্থ-বিত্তে সমৃদ্ধ আমেরিকা সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে নানা অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। বিশ্বজনীন আর্ন্তজাতিক সংস্থাগুলোতে আমেরিকার গঠনমূলক অংশগ্রহণ ও অবদান নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। নতুন নেতৃত্বকে এ ব্যাপারে লাগ-সই ভূমিকা রাখতে হবে।

ব্যক্তি-পদ প্রধান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নিবার্হী ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ সম্বলিত শাসন ব্যবস্থা বলবৎ থাকলেও আমেরিকা তার বহু মত-পথের সমন্বিত সমাজ ব্যবস্থাকে উড্ডীন রেখেছে সর্বদা।
দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার কূট-কৌশল থাকলেও আমেরিকা কখনও তার রাজনৈতিক প্রচলিত প্রথা ও বহুজাতিক সমাজের আবেগ উপেক্ষা করেনি। দল-নামীয় নামকরণ না হয়ে ব্যক্তি-নামীয় নামকরনের প্রশাসন নামে  বিশ্বে সমধিক পরিচিত আমেরিকা। কিন্তু তা বলে কখনই তা তার দলীয় রীতিনীতি, দর্শন ও নেতৃত্বকে উপেক্ষা করেনি। ফলশ্রুতিতে আমেরিকার দ্বি-দল রাজনৈতিক ব্যবস্থা সর্বদাই সমৃদ্ধ থেকেছে এবং এতে তৃতীয় কোন শক্তির উত্থান ও দর্শনের বিকাশ ঘটেনি।
বিশ্ব রাজনীতির নানা সমীকরণে আমেরিকা সব সময় প্রধান প্রভাব বিস্তার করেছে। এর মূল কারণ আমেরিকা তার রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরে সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থেকেছে, বর্হিবিশ্বে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ দ্বি-দলীয় অবস্থানের ভিন্নতা তাকে কখনই কাবু করতে পারেনি। তাছাড়া আমেরিকার বহুজাতিক নাগরিক সমাজ সব সময় আমেরিকান হয়ে থেকেছে। অভিবাসী সমাজের এক আর্দশ দর্পণ আমেরিকা।
আমেরিকান নির্মাণ ও বিনির্মাণে বহুজাতিক অভিবাসীরা অত্যন্ত বলিষ্ট অবদান রেখেছে সর্বদা। ঐক্যবদ্ধ থেকে তারা পরিচয় দিয়েছে ‘আমরা আমেরিকান’ বলে এবং আমেরিকাকে বিশ্বব্যাপী পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ‘দিস ইজ এ্যামেরিকা’ বলে। সেই আমেরিকা তার বহুমাত্রিক ও বহুজাতিক সংস্কৃতির মূল ধারা থেকে বিচ্যুত হয়ে এক-আঙ্গিক ধারায় বিকশিত হবে এমন অবস্থান আমেরিকানরাও চায়না এবং বিশ্ববাসীও কামনা করে না। তাইতো বিশ^ব্যাপী ছড়িয়ে থাকা আমেরিকান অভিবাসীর পরিবারগুলোর সদস্যরাও নিজ দেশের পরে পরেই আমেরিকার আবেগ অনুভূতির সাথে অজান্তেই একাত্ম হয়ে যায়। আর তাতেই আমেরিকা হয় ‘গ্রেট’ ।
আধুনিক বিশ্বে ও করোনা-উত্তর বিশ্ব অর্থনীতির নতুন পথ চলায় আমেরিকাকে তার মূল চেতনায় বলিষ্ট হতে হবে এবং সবাইকে নিয়ে চলার সংস্কৃতির বিকাশে শ্রদ্ধাবান হতে হবে, দেশে-দেশে জাতিতে-জাতিতে যে বিবাদ কলহ বিরাজমান তাকে উস্কে না দিয়ে ’গালাগালি’ কে ’গলাগলি’ তে রাপান্তরে ভূমিকা নিতে হবে বড় অর্থনীতির দেশটিকে, প্রমাণ করতে হবে নিজের শ্রেষ্ঠত্বের। আরব বিশ্বের নানা বিরোধে আমেরিকাকে হতে হবে শান্তিকামী পৃথিবীর অনুকূলে যুদ্ধহীন এবং পারষ্পরিক সম্মানজনক সমাধান খোঁজার অগ্র-সৈনিক।
আধুনিক আমেরিকার আর্থ-সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বাংলাদেশও এক অংশীদার। বাংলাদেশী আমেরিকানরা এই নির্বাচনে অনেক বেশী সক্রিয় ছিল গোটা আমেরিকা জুড়ে। দুই দলেই তাদের অংশগ্রহণ কম বেশী দৃশ্যমান ছিল। এই অংশগ্রহণকে কাজে লাগাতে হবে শান্তিবাদের জন্য ।
বাংলাদেশীরা এই নিবার্চনে ব্যাপক অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমেরিকান সমাজে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। অতএব এই নির্বাচনে বিজয়ের অভিনন্দন শুধু ’বাইডেন-হ্যারিস’ কেই নয়, অভিনন্দন ’বাংলাদেশী-আমেরিকান’ দেরও।

লেখক: সেন্টার ফর এনআরবি ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর